জিজ্ঞাসা–১৬২৯: শোনা যায় যে, আউয়াল ওয়াক্তে নামাজ পড়া সুন্নাত। এটা কি সঠিক?
জবাব: মাগরিব ছাড়া প্রত্যেক নামাজেরই একটি মুস্তাহাব সময় রয়েছে। যা আওয়াল ওয়াক্ত (ওয়াক্ত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে) থেকে কিছুটা পরে। যেমন, ফজরের নামাজ সম্পর্কে রাফে বিন খাদিজ রাযি. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাল্লাহ ﷺ বলেন,
أَسْفِرُوا بِالفَجْرِ، فَإِنّهُ أَعْظَمُ لِلأَجْرِ
তোমরা ফজরের নামাজ চারদিক আলোকিত হয়ে যাওয়ার পর পড়বে। কেননা তাতে অধিক সওয়াব রয়েছে। (জামে তিরমিযী ১৫৪)
যোহরের নামাজ সম্পর্কে আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে বলা হয়েছে,
إِذَا اشْتَدّ الحَرّ فَأَبْرِدُوا بِالصّلاَةِ
রোদের তাপ বেশি হলে তাপমাত্রা কমে আসার পর যোহরের নামাজ পড়। (সহীহ বুখারী ৫৩৬)
আসরের নামাজ সম্পর্কে জাবির রাযি. বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يُصَلِّي الظّهْرَ بِالْهَاجِرَةِ، وَالْعَصْرَ وَالشّمْسُ بَيْضَاءُ نَقِيّة
রাসূল ﷺ যোহরের নামাজ আদায় করতেন দ্বিপ্রহরে। আর আসর নামাজ আদায় করতেন সূর্য শুভ্র ও উজ্জ্বল থাকতেই। (সুনান নাসায়ী ৫২৭)
ইশার নামাজ সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাযি. বলেন, একরাতে আমরা শেষ ইশার নামাজ আদায়ের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ -এর অপেক্ষায় ছিলাম। রাতের এক তৃতীয়াংশ অথবা আরো কিছু বেশী সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি আমাদের কাছে বেরিয়ে এলেন। আমরা জানতাম না যে, জরুরী কোন কাজ তাঁকে তাঁর গৃহে ব্যস্ত রেখেছিল, না অন্য কোন কাজে তিনি মশশুল ছিলেন। তারপর তিনি বেরিয়ে এসে বললেন,
إِنَّكُمْ لَتَنْتَظِرُونَ صَلَاةً مَا يَنْتَظِرُهَا أَهْلُ دِينٍ غَيْرُكُمْ ، وَلَوْلَا أَنْ يَثْقُلَ عَلَى أُمَّتِي لَصَلَّيْتُ بِهِمْ هَذِهِ السَّاعَةَ ، ثُمَّ أَمَرَ الْمُؤَذِّنَ فَأَقَامَ الصَّلَاةَ ، وَصَلَّى
তোমরা এমন এক নামাজের অপেক্ষা করছ, যার জন্য তোমরা-ছাড়া অন্য কোন ধর্মাবলম্বীগণ অপেক্ষা করে নি। আমার উম্মতের উপর যদি তা ভারী না হতো, তাহলে তাদের নিয়ে এই সময়ই নামাজ আদায় করতাম। তারপর তিনি মুআযযিনকে আদেশ দিলেন। সে নামাজের ইকামত দিল এবং তিনি সালাত আদায় করলেন। (সহীহ মুসলিম ৬৩৯)
এসব হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মাগরিব ছাড়া অন্যান্য নামাজের মুস্তাহাব সময় আওয়াল ওয়াক্তে নয়; বরং ওয়াক্ত শুরু হওয়ার কিছুটা পরে।