ইমামের উচ্চস্বরে তেলাওয়াতরত অবস্থায় সানা পড়া যাবে কি?

জিজ্ঞাসা–১৫৬৯: নামাজে ইমাম উচ্চস্বরে তেলাওয়াতরত থাকলে আমি যদি তখন নামাযে গিয়ে দাঁড়াই তখন কি সানা পাঠ করবো নাকি তেলাওয়াত শেষে সানা পাঠ করবো?–নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। 

জবাব:

এক. ইমামের উচ্চস্বরে কেরাত পড়া অবস্থায় কেরাত শুনা ফরজ। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُواْ لَهُ وَأَنصِتُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
যখন কুরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা শোনো মনোযোগ সহকারে এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। (সূরা আ’রাফ ২০৪)

আবু মুসা আলআশআরী রাযি. বলেন,

إنَّ رسولَ اللهِ خطَبَنا فبيَّنَ لنا سُنَّتَنا وعلَّمَنا صلاتَنا، فقال: إذا صلَّيْتُم فأقِيموا صفوفَكم، ثمَّ لْيَؤُمَّكم أحدُكم، فإذا كبَّرَ فكبِّروا، وإذا قرَأ فأنصِتوا

রাসূলুল্লাহ আমাদেরকে ভাষণ দিয়েছেন, আমাদেরকে আমাদের নিয়ম-কানুন বাতলে দিয়েছেন এবং আমাদেরকে আমাদের নামাজ শিক্ষা দিয়েছেন। তখন তিনি বলেছেন, তোমরা যখন নামাজ আদায় করবে, তোমাদের কাতারগুলো ঠিক করে নিবে। অতঃপর তোমাদের কেউ তোমাদের ইমামতি করবে। সে যখন তাকবীর বলবে, তোমরাও তাকবীর বলবে। সে যখন কেরাত পড়বে, তখন তোমরা চুপ থাকবে। (মুসলিম, পরিচ্ছেদঃ সালাতে তাশাহহুদ পাঠ করা)

সুতরাং ইমাম যখন উচ্চস্বরে কেরাত পড়বেন তখন সানা না পড়ে ইমামের কেরাত শুনবেন।

দুই. ইমামের তেলাওয়াত শেষেও সানা পড়বেন না; বরং তখন ইমামের অনুসরণ করে কেরাত শেষে রুকুতে চলে যাবেন। কেননা, জামাতের নামাজের ক্ষেত্রে মুসল্লি ইমামের ইক্তেদা বা অনুসরণ করতে হয়; অন্যথায় নামাজ সহিহ হয় না। কেননা, আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

إنَّما جُعِلَ الإمامُ ليؤتمَّ به، فإذا كبَّر فكبِّروا، وإذا قرأَ فأَنصِتوا، وإذا قال: غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ، فقولوا: آمِينَ، وإذا ركَع فارْكعوا، وإذا قال: سمِعَ اللهُ لِمَن حمِدَه، فقولوا: اللهمَّ ربَّنا ولك الحمد، وإذا سجَد فاسجدُوا

‘জামাতের নামাযে ইমাম হল অনুসরণের জন্য। অতএব, ইমাম যখন আল্লাহু আকবর বলবে, তোমরাও আল্লাহু আকবর বলবে। আর ইমাম যখন কিরাআত পড়বে তখন তোমরা চুপ থাকবে। যখন ইমাম বলবে غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ তখন তোমরা ‘আমীন’ বলবে। যখন তিনি রুকু করবেন তখন তোমরাও রুকু করবে। যখন তিনি سمِعَ اللهُ لِمَن حمِدَه বলবে তখন তোমরা  اللهمَّ ربَّنا ولك الحمد বলবে। যখন তিনি সিজদা দিবেন তখন তোমরাও সিজদা দিবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ  ১/৬১)

উল্লেখ্য, কেউ একা পড়ুক বা জামাতে নামাজ পড়ুক–উভয় অবস্থায় সানা পড়া সুন্নাত। আর নামাজের কোনো সুন্নাত ছুটে গেলে গুনাহ হয় না; তবে ফজিলত কমে যায়।

والله أعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 1 =