জিজ্ঞাসা–৮৫৪: আসসালামু আলাইকুম। আমি যদি পড়াশুনার সময় কুরআন শুনি, বিশেষ করে লেখালেখির সময়; সেটা কী ঠিক হবে? ঘুমানোর পূর্বেও মোবাইলে হেডফোন দিয়ে শুনি। এই বিষয়ে ডিটেইলস জানতে চাচ্ছি। আর অগ্রীম ধন্যবাদ।–nishat
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
বিভিন্ন কাজের ফাঁকে কোরআন তেলাওয়াত শোনা নিষেধ নয় তবে উচিত নয়। কেননা, কাজে ব্যস্ত থাকার সময় কোরআন তেলাওয়াত শোনার ক্ষেত্রে তেলাওয়াতের প্রতি মনোযোগ থাকে না। অথচ যখন কোরআন তেলাওয়াত করা হয় তখন তা মনোযোগসহ শ্রবণ করা আবশ্যক। (ফাতওয়ায়ে শামী-১/৫১০)
আল্লাহ তাআ’লা বলেন,
وَإِذَا قُرِىءَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُواْ لَهُ وَأَنصِتُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
যখন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন তোমরা তা শোন এবং চুপ থাক, যেন তোমাদের উপর করুণা করা হয়। (সূরা আ’রাফ ২০৪)
হাদিস শরিফে এসেছে, আবু হোরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ اسْتَمَعَ إِلَى آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ تَعَالَى ، كُتِبَ لَهُ حَسَنَةٌ مُضَاعَفَةٌ ، وَمَنْ تَلَاهَا كَانَتْ لَهُ نُورًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ
যে ব্যক্তি কোরআনের একটি আয়াত মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করবে, তার জন্য বহুগুণ বর্ধিত সাওয়াব লিখা হবে। আর যে ব্যক্তি তা তেলাওয়াত করবে, তার জন্য এই আয়াতটি কিয়ামতের দিন নূরে পরিণত হবে। (মুসনাদে আহমদ ৮৪৯৪)
ইবনু আব্বাস রাযি. বলেন,
مَنْ اسْتَمَعَ إِلَى آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ كَانَتْ لَهُ نُورًا
যদি কেউ আল্লাহর কিতাবের একটি আয়াতও মনোযোগসহ শ্রবণ করে, তাহলে তা কিয়ামতের দিন তার জন্য নূরে পরিণত হবে। (সুনানুদ দারিমী ২/৫৩৬)
অনেক তাবেয়ী বুজুর্গ মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করাকে তেলাওয়াতের চেয়েও বেশি সাওয়াবের বলে মনে করতেন। প্রখ্যাত তাবেয়ী খালিদ ইবনু মা’দান (১০৩ হি) বলেন,
إِنَّ الَّذِي يَقْرَأُ الْقُرْآنَ لَهُ أَجْرٌ ، وَإِنَّ الَّذِي يَسْتَمِعُ لَهُ أَجْرَانِ
যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করেন, তার জন্য রয়েছে একটি পুরস্কার। আর যিনি তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করেন, তার জন্য রয়েছে দুটি পুরস্কার। (সুনানুদ দারিমী ২/৫৩৬)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী