জিজ্ঞাসা–১৪২৩: আসসালামু আলাইকুম। হুজুর, আমাকে তিনটি প্রশ্নের উত্তর সহিহ্ হাদিস ও রেফারেন্সের মাধ্যমে দিয়ে উপকৃত করবেন। ১) বর্তমানে টেলিভিশনে একটি জনপ্রিয় কার্টুন পোগ্রাম রয়েছে যেখান চতুষ্পদ জন্তু জানোয়ারদের মানুষদের চেয়েও অধিক বুদ্ধিমান ও শক্তিশালী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এমন কি এই কার্টুনের মধ্যে জন্তু জানোয়ারের সাথে মানুষদের কথা বলতেও দেখা যায়। এরূপ কার্টুন চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে ইসলামের বিধান কী? ২) এমন কার্টুন চলচ্চিত্র কি বাচ্চারা দেখতে পারবে? ৩) যদি না জায়েজ হয় সেক্ষত্রে কেউ (বালেগ) যদি শুধু বিনোদনের জন্য উক্ত অনুষ্ঠানটি দেখে বা দেখতে চায় তখন কি তার এই ইচ্ছার কারণে কোনো গুনাহ্ হবে? ধন্যবাদ।–মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
প্রিয় প্রশ্নকারী দীনী ভাই, আপনার প্রশ্নের বিবরণ থেকে বুঝা যায় যে, উক্ত কার্টুন সিরিজে এমন কিছু বিষয় আছে, যা আকিদা-বিশ্বাসের উপর মারাত্মক ঝুঁকি। রয়েছে কল্পনার রাজ্য এবং অসম্ভব কিছু করার শিক্ষা, যা বস্তুত একটি শিশুর বাস্তবতার জ্ঞানকে নষ্ট করে ফেলে। সুতরাং উক্ত কার্টুন সিরিজ দেখা কোনোভাবেই জায়েয হতে পারে না।
মূল সমস্যা হল, এজাতীয় কার্টুন সিরিজ যারা দেখে তাদের অধিকাংশের কাছে এই পরিমাণ ইসলামি শিক্ষা থাকে না যে, যার মাধ্যমে বিশেষ করে আকিদা-বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো ধরতে পারে। ফলে মনের অজান্তেই কুফরি বিশ্বাসগুলো তাদের মনে এমনভাবে জায়গা করে বসে যে, যা তাদের আখেরাতের জীবনকে চূড়ান্ত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلاَ تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولـئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْؤُولاً
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে। (সূরা বনী-ইসরাঈল ৩৬)
রাসূল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ : عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ
বিচার দিবসে মানুষের পা একবিন্দু নড়তে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার নিকট এই পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা না হবে। এক. নিজের জীবনকাল সে কোন কাজে অতিবাহিত করেছে? দুই. যৌবনেরে শক্তি সামর্থ্য কোথায় ব্যয় করেছে? তিন. ধন সম্পদ কোথা হতে উপার্জন করেছে? চার. অর্জিত ধন সম্পদ কোথায় ব্যয় করেছে? পাঁচ. এবং (দীনের) যতটুকু ইলম অর্জন করেছে সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে? (জামে তিরমিযী ২৪১৬)।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী