কোন কারণবশতঃ নামাজ পড়তে না পারলে কী করণীয়?

জিজ্ঞাসা-১২: কোন কারণবশতঃ নামাজ পড়তে না পারলে কী করণীয়?–Sheuly Khatun
জবাব : কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে ইমানের পর নামাজের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। চাই তা সময়মতো আদায় করা হোক অথবা ওয়াক্তের পর কাযা করা হোক। যদি কোনো কারণে সময়মতো নামাজ পড়তে না পারে তাহলে মুসলিম উম্মাহর সব মুজতাহিদ ইমাম এ ব্যাপারে একমত যে, পরবর্তী সময়ে তা কাযা করা জরুরি।যেমন মালেকি মাজহাবের সুপ্রসিদ্ধ ইমাম ইবনে আবদুল বার (রহ.) বলেন, ‘ফরজ রোজার মতো ফরজ নামাজও সময় অতিবাহিত হওয়ার পর কাযা করতে হয়। এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমাই যথেষ্ঠ দলিল।’ (আল ইসতিজকার : ১/৩০২)
পবিত্র কোরআনের সুরায়ে নিসার ১০৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘’নিঃসন্দেহে মুমিনদের প্রতি নামাজ অপরিহার্য রয়েছে, যার সময়সীমা নির্ধারিত।”এ আয়াতে নামাজের সময়সীমা নির্ধারিত হওয়ার বিষয়টি যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, তেমনি নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা না হলে পরবর্তী সময়ে ওই নামাজ কাজা করার বিষয়টিও পরোক্ষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ এটা আল্লাহ তায়ালার ঋণ, আর ঋণ সময়মতো আদায় না করতে পারলে পরবর্তী সময়ে তা আদায় করা জরুরি।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ”ঘুম বা বিস্মৃতির কারণে যার নামাজ ছুটে গেল, যখন সে জাগ্রত হবে, তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। (বুখারি : ৫৯৭, মুসলিম : ৬৮১)
উল্লেখ্য,কাযা নামাজ আদায় করার পদ্ধতি হল-যদি নির্দিষ্ট কোন্ দিন নামাজ কাযা করেছে তা মনে থাকে তাহলে সেদিনের উক্ত নামাজের কাযা আদায় করার নিয়তে নামায পড়ে নিবে। আর যদি কাযার সময় জানা না থাকে। তাহলে এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জীবনে যত নামাজ কাযা হয়েছে, তার প্রথম কাযা হওয়া ফজরের নামাজ আদায় করছি। তারপর মনে মনে বলবে তারপরের নামাজের নিয়ত করছি। এভাবে পড়তে থাকবে। তাহলে ইনশা-আল্লাহ আল্লাহ তায়ালা নামাজ কাযা করার গোনাহ থেকে মুক্ত করবেন। ‘’ফাতওয়ায়ে আলমগীরী’’তে আছে যদি কোনো ব্যাক্তি মৃত্যু পর্যন্তও কাযা আদায়ে সক্ষম না হয় তাহলে প্রত্যেকদিনের জন্য মোট ছয় ওয়াক্ত (বিতরসহ)নামাজের কাফ্ফারা দিতে হবে। প্রতি ওয়াক্ত কাযা নামাজের কাফ্ফারা হল, “পৌনে দুই সের গম বা তার বর্তমান বাজার মূল্য” আদায় করে দেয়া।

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − eleven =