জিজ্ঞাসা–৮৮: কোরআন শরিফ ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করার পর সেই কাজ আবার করলে কাফফারা দিতে হয় কিনা?— shahid
জবাব: যেকোনো ধরনের ওয়াদা-অঙ্গীকার-শপথ বা চুক্তি পূরণ করা ওয়াজিব এবং এটা ইমানের পরিপূর্ণতার জন্য একটি অপরিহার্য শর্ত। ওয়াদা ভঙ্গ করা বা চুক্তিবিরোধী কাজ করা ইমানের পরিপন্থী, যাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) মুনাফেকির আলামত বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর কোরআন শরীফ ধরে কোনো কিছু বললে প্রচলনে সেটাকে কেবল ওয়াদা নয়;বরং শপথ হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। সুতরাং যদি তা বৈধ বিষয়ে হয় তাহলে পূরণ করা বাধ্যতামূলক হবে। কোনো কারণে পূরণ না করে ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে।কিন্তু যদি বলার সময় এমনি হাতে থাকে, কোরআন শরীফ ধরে ওয়াদা করা উদ্দেশ্য না থাকে, তাহলে তা ওয়াদা হবে কিনা—তা নিভর্র করবে বক্তার কথার উপর অথাৎ যদি তার কথা ওয়াদাসূচক হয় তাহলে মানা বাধ্যতামূলক হবে। পক্ষান্তরে যদি তার কথা কোনো ইচ্ছা বা আকাঙ্খা ব্যক্তকরণের উদ্দেশ্যে হয় তাহলে মানা বাধ্যতামূলক হবেনা।
উল্লেখ্য, কসম একমাত্র আল্লাহ তাআলার নামেই করা যায়। আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্য কোনো জিনিসের কসম করা নাজায়েয। এমনকি কোরআন শরীফের কসম করাও জায়েজ নয়। হযরত সাহাম ইবনে মিনজাব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি কুরআন শরীফের কোন একটি সূরার কসম করবে সে ঐ সূরার প্রত্যেকটি আয়াতের বদলায় একটি করে গুনাহ নিয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদীস ১২৩৬০)
তবে নাজায়েয হলেও কোরআন মজীদের কসম করলে কসম সংঘটিত হয়ে যায়।আর কসমের কাফফারা হল, দশ জন মিসকীনকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানো। অথবা প্রত্যেককে এক জোড়া কাপড় দেওয়া। আর তা সম্ভব না হলে এক নাগাড়ে তিন দিন রোযা রাখা।(বাদায়েউস সানায়ে ৩/৬৩; আলবাহরুর রায়েক ৪/২৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৫৩)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী