জিজ্ঞাসা–১৮৩৫: আমি একজন গৃহিণী। মোহরানা বাবদ ৫ লাখ টাকার গহনা পাই। তখন কেউ বলেছিল যে, আমার উপর হজ ফরজ। গহনার দাম কিছু বেড়ে কমে ২০২৩ সালে ৫ লাখ ২৬ হাজার টাকার যাকাত দিয়েছি। আমার উপর কি তখন হজ্ব ফরজ ছিল? এখন তো মাথা পিছু ৮ লাখ টাকা হজ বাবদ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কি এখন আমার উপর হজ্ব ফরজ হয়েছে? (২০২১ সালে আমার কাছে প্রায় ছয় লাখ এর মতো গহনা ও টাকা ছিল তাহলে তখন কি আমার উপর হজ ফরজ হয়ে গিয়েছিল?)– আশুগঞ্জ থেকে।
জবাব: প্রিয় বোন, যাকাতের ক্ষেত্রে যেমন নেসাবের শর্ত আছে, হজের ক্ষেত্রে এরকম নয়। বরং বাইতুল্লাহ পর্যন্ত যাওয়া-আসা এবং প্রাসঙ্গিক খরচাদির ব্যবস্থা থাকলেই হজ ফরজ হয়ে যায়। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلِلّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً
মানুষের মধ্যে যারা সেখানে পোঁছার সামর্থ্য রাখে, তাদের ওপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ করা ফরজ। (সূরা আল ইমরান ৯৭)
তবে পুরুষের মতো আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ্যবান হলেই নারীর ওপর হজ ফরজ হয় না, বরং নারীর জন্য কিছু অতিরিক্ত শর্ত পূরণ হওয়া জরুরি। যেমন,
স্বামী বা মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের হজে গমন শরিয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ নয়, তাই মাহরামের হজের খরচ সম্পন্ন করার সক্ষমতা থাকা। কেবল নিজের হজ করার সামর্থ্য থাকলেও নারীর জন্য হজ ফরজ হয় না। (বাহরুর রায়েক ২/৩৩৯)
উল্লেখ্য, এটা ভিন্ন কথা যে, মাহরাম যদি ফরজ হজ করতে যায়, সেক্ষেত্রে তার সঙ্গে গেলে খরচ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
প্রিয় বোন, আমাদের ঠিক জানা নেই, ২০২১ সালে ছয় লাখ টাকা দিয়ে আপনি এবং আপনার সঙ্গে একজন মাহরাম পুরুষ হজ সম্পন্ন করতে পারতেন কিনা; যদি উত্তর ‘হ্যাঁ’ হয় তাহলে আপনার ওপর হজ ফরজ হয়েছিল। আর যদি উত্তর ‘না’ হয় তাহলে আপনার ওপর হজ ফরজ হয় নি।
আর যেহেতু একবার হজ ফরজ হলে, তা আর কখনো মাফ হয় না। (আহসানুল ফতোয়া, খণ্ড: ০৪, পৃষ্ঠা- ৫২৮) সুতরাং যদি উক্ত আলোচনার আলোকে আপনার ওপর হজ ফরজ হয়ে থাকে তাহলে অহেতুক হজ আদায়ে বিলম্ব করার গুনাহ থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা করুন এবং আদায়ের সক্ষমতার ফিরে পাওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করার পাশাপাশি চেষ্টা অব্যাহত রাখুন।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী