জিজ্ঞাসা–১৭৪৯: সম্মানিত,শায়খ আমার স্ত্রী বর্তমানে মেশকাত জামাতে লেখাপড়া করছে। লেখাপড়ার কারণে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহার করা হচ্ছে। যাতে করে পড়ার সমস্যা না হয়।
এখন আমার প্রশ্ন হলো, পড়ালেখার সমস্যা হওয়ার কারণে যদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি করা হয় তাহলে কি গুনাহগার হবো? বা এর হিসাব কি কিয়ামতের দিন দিতে হবে? বিস্তারিত জানতে চাই।
জবাব: খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে, কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে, অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে জন্ম নিয়ন্ত্রনের কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা জায়েয নয়। বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ। আল্লাহ বলেছেন,
وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلَاقٍ ۖ نَّحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ ۚ إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْئًا كَبِيرًا
দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…।(সূরা ইসরা ৩১)
অন্যত্র তিনি বলেন,
الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ
শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়। (সূরা আল-বাক্বারা)
পক্ষান্তরে উক্ত কারণগুলো বিদ্যমান না থাকলে জন্মনিয়ন্ত্রণের সাময়িক পদ্ধতি যেমন, আযল করা (সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো), Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল (Pill) খাওয়া, জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদির অনুমতি আছে। (ইমদাদুল ফাতাওয়া ৪/২০৪)
হাদীস শরীফে এসেছে,
عن جابر قال كنا نعزل على عهد النبي ﷺ
জাবের রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যুগে আযল (যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি) করতাম। (বুখারী ২/৭৮৪)
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত কারণ যদি শতভাগ বাস্তব হয় তাহলে তার জন্যও অনুমতি আছে।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী