জিজ্ঞাসা–১১৮৬: ফজরের নামাজের পর যদি ঘুমাই তাহলে কখন ঘুমাবো? সূর্য উঠার পর নাকি ১০ টার পর?–সোহাগ।
জবাব:
এক. ইসলাম ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত না ঘুমিয়ে জিকির, তেলাওয়াত কিংবা দুনিয়াবি অন্য ভালো কাজ করার প্রতি উৎসাহিত করেছে। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا
আপনার পালনকর্তার প্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে, সূর্যাস্তের পূর্বে। (সূরা ত্বহা ১৩০)
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ
যে ব্যক্তি জামাআতের সাথে ফজরের নামাজ আদায় করে সূর্যোদয় পর্যন্ত সেখানে বসে আল্লাহর যিকর করবে এবং এরপর দু’রাকআত সালাত আদায় করবে, তার জন্য একটি হজ্জ ও উমরা পালনের সওয়াব হবে।
একারণে সালফে সালেহীনের মধ্য থেকে অনেকেই ফজরের পরে ঘুমানোকে মাকরুহ মনে করতেন। তাঁরা মনে করতেন, ভোরবেলা ঘুমালে ওই বরকত থেকে বঞ্চিত হতে হয়, যে বরকতের দোয়া রাসুলুল্লাহ ﷺ করেছেন। সখর গামেদি রাযি. সূত্রে বর্ণিত, রাসুল ﷺ এ দোয়া করেছেন,
اللَّهُمَّ بَارِكْ لأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا
‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য দিনের শুরু বরকতময় করুন।’
বর্ণনাকারী বলেন, এ জন্যই রাসুল ﷺ কোনো যুদ্ধ অভিযানে বাহিনী পাঠানোর সময় দিনের শুরুতে পাঠাতেন। আর সখর রাযি. ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনিও তাঁর ব্যবসায়ী কার্যক্রম ভোরবেলা শুরু করতেন। এতে তাঁর ব্যবসায় অনেক উন্নতি হয় এবং তিনি সীমাহীন প্রাচুর্য লাভ করেন। (আবু দাউদ ২৬০৬)
বিস্তারিত দেখুন জিজ্ঞাসা নং–৮৬৬।
দুই. তবে কোনো ব্যক্তি যদি ঘুমোতে চায় তাহলে সূর্য পরিপূর্ণভাবে উঠে যাওয়ার ঘুমোতে পারে। ইবনুল কাইয়িম রহ. বলেন,
المكروه عندهم – أي الفقهاء -: النوم بين صلاة الصبح وطلوع الشمس؛ فإنه وقت غنيمة
ফকিহদের নিকট মাকরূহ হচ্ছে, ফজরের নামাজ এবং সূর্য উঠার মধ্যবর্তী সময়। কেননা, সময়টি মূল্যবান। (মাদারিজুস সালিকীন ২/৩২৪)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী