জিজ্ঞাসা–১০৮৬: আমি ছোটবেলা থেকেই ‘Ben 10’ নামক একটি কার্টুন দেখে বড় হয়েছি। বড় হওয়ার পরেও এটি দেখি। এখানে উত্তেজনামূলক কিছু নেই এবং এটি দেখে সাইন্স ফিকশনের অনেক কিছু শেখা যায়। এটি দেখলে কি গুনাহ হবে?–নাজমুল আহসান রুহান।
জবাব: Ben 10 নামক কার্টুন সিরিজ সম্পর্কে উইকিপিডিয়া থেকে জানতে পারলাম যে, এটি আমেরিকান মিডিয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং টেলিভিশন সিরিজ যা ম্যান অফ অ্যাকশন স্টুডিও দ্বারা নির্মিত এবং কার্টুন নেটওয়ার্ক স্টুডিও দ্বারা প্রযোজিত। মূল চরিত্র বেন টেনিসন নামের একটি ছেলে যে চারপাশের পরিবেশে ঘুরে বেড়ায়। তার কাছে একটি ঘড়ির মতো এলিয়েন ডিভাইস আছে যার নাম অ্যামনিট্রিক্স। যা তাকে দশটি ভিনগ্রহের প্রাণীতে রূপান্তর করতে পারে। (https://bn.wikipedia.org/wiki)
এ থেকে বুঝা যায় যে, উক্ত কার্টুন সিরিজে এমন কিছু বিষয় আছে, যা আকিদা-বিশ্বাসের উপর মারাত্মক ঝুঁকি। রয়েছে কল্পনার রাজ্য এবং অসম্ভব কিছু করার শিক্ষা, যা বস্তুত একটি শিশুর বাস্তবতার জ্ঞানকে নষ্ট করে ফেলে। যেমন-অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতা বাস্তবে যার অস্তিত্ব নেই, মহাকাশের বিভিন্ন জীব বা এলিয়েনের চিত্রায়ন ইত্যাদি। আবার যেহেতু সিরিজটির আবিস্কারক আমেরিকান মিডিয়া কোম্পানি সুতরাং এমন কিছু বিষয় থাকাটাই স্বাভাবিক যা দর্শকের চারিত্রিক ব্যুহকে ধ্বংস করে দিতে পারে। সুতরাং উক্ত কার্টুন সিরিজ দেখা কোনোভাবেই জায়েয হতে পারে না।
মূল সমস্যা হল, এজাতীয় কার্টুন সিরিজ যারা দেখে তাদের অধিকাংশের কাছে এই পরিমাণ ইসলামি শিক্ষা থাকে না যে, যার মাধ্যমে বিশেষ করে আকিদা-বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো ধরতে পারে। ফলে মনের অজান্তেই কুফরি বিশ্বাসগুলো তাদের মনে এমনভাবে জায়গা করে বসে যে, যা তাদের আখেরাতের জীবনকে চূড়ান্ত ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلاَ تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولـئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْؤُولاً
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে। (সূরা বনী-ইসরাঈল ৩৬)
রাসূল্লাহ ﷺ বলেছেন,
لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ : عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ
বিচার দিবসে মানুষের পা একবিন্দু নড়তে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার নিকট এই পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা না হবে। এক. নিজের জীবনকাল সে কোন কাজে অতিবাহিত করেছে? দুই. যৌবনেরে শক্তি সামর্থ্য কোথায় ব্যয় করেছে? তিন. ধন সম্পদ কোথা হতে উপার্জন করেছে? চার. অর্জিত ধন সম্পদ কোথায় ব্যয় করেছে? পাঁচ. এবং (দীনের) যতটুকু ইলম অর্জন করেছে সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে? (জামে তিরমিযী ২৪১৬)।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী