বেপর্দা শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা দেয়া যাবে কি?

জিজ্ঞাসা–১৫২৯: আসসালামুআলআইকুম। স্কুলে মধ্যে যে শিক্ষিকারা ক্লাস করায় তখন তাদের মধ্যে কেউ পর্দা করে আবার কেউ তা করে না। যারা পর্দা করে না তাদের দেখা কি জায়েজ?–মোঃ তানভীর আহম্মেদ।

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

এক. কোনো মহিলা বিশেষ কোনো প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে চাইলে পর্দার সাথে বের হওয়া আবশ্যক, যাতে শয়তান পরপুরুষকে ফেতনায় ফেলতে না পারে। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

يآ أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسآءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ

হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বলে দিন, তারা যেন নিজেদের জিলবাব টেনে নেয়। (সূরা আহযাব  ৫৯)

আলোচ্য আয়াতের তাফসীরে আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি বলেন,

أمر الله نساء المؤمنين إذا خرجن من بيوتهن في حاجة أن يغطين وجوههن من فوق رءوسهن بالجلابيب

আল্লাহ তাআলা মুমিন নারীদের নির্দেশ দিয়েছেন, যখন তারা কোনো প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে তখন যেন নিজেদের মাথা ও চেহারা চাদর দ্বারা ঢেকে নেয়। (তাফসীরে ইবনু কাসীর ৩/৫১৮)

দুই. সুতরাং যে সকল শিক্ষিকা পর্দা করে না তাদেরকে দেখা জায়েয হবে না। মুলতঃ ইসলামে পরনারীকে দেখা তো দূরের কথা, এমনকি ফেতনার আশঙ্কা থাকলে তাকে সালাম দেয়াও হারাম। যেমন, ইমাম নববী রহ. বলেন,

 وإن كانت أجنبية يخاف الافتتان بها لم يسلم الرجل عليها ، ولو سلم لم يجز لها رد الجواب

যদি পরনারী এমন হয় যে ,ফিতনার আশঙ্কা আছে তাহলে পুরুষ তাকে সালাম দিবে না। যদি সে সালাম দিয়ে দেয় তাহলে মহিলা উত্তর দিবে না। (আলাযকার ৪০৭)

আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যাতে (৩৫/১২২) এসেছে,

ذهب الفقهاء إلى أنه لا يجوز التكلم مع الشابة الأجنبية بلا حاجة لأنه مظنة الفتنة

ফকিহগণ বলেছেন, যুবতী পরনারীর সঙ্গে বিনা প্রয়োজনে কথা বলা জায়েয নেই। কেননা এতে ফেতনার আশঙ্কা রয়েছে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ এটাকে যেনা বা ব্যভিচার বলেছেন,

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْككَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, জিহবার ব্যভিচার হল, [পরনারীর সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে। (সহীহ মুসলিম ২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ ৮৯৩২)

والله أعلم بالصواب

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 17 =