জিজ্ঞাসা–২৮৫: বয়োবৃদ্ধ লোকের রোজার ফিদইয়া বাবদ রমজান মাসে যদি কোন ব্যক্তিকে সাহরী ও ইফতারের ব্যবস্থা করে, তাহলে কি বয়োবৃদ্ধ লোকের ফিদইয়া আদায় সহিহ হবে? আর ঐ ব্যক্তির রোজা ও কি সহিহ হবে? দলিলসহ জানেলে খুশি হবো।– jahid hassan
জবাব: শরিয়তের বিধান হল, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল কিন্তু তিনি সিয়াম পালনে সক্ষম নন– অতিশয় বৃদ্ধ হওয়ার কারণে অথবা এমন অসুস্থ হওয়ার কারণে যার আরোগ্য লাভের আশা করা যায় না, তার উপর রোজা ফরজ নয়। তিনি রোজা ভঙ্গ করতে পারবেন এবং প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে সাদাকায়ে ফিতরের সমান খাবার দিবেন অথবা সকাল-সন্ধ্যা পেট ভরে তাকে খানা খাওয়াবেন।
কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ * أَيَّاماً مَعْدُودَاتٍ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضاً أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ فَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْراً فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ وَأَنْ تَصُومُوا خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ
“হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ থাকবে, কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া তথা একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর সিয়াম পালন তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে। (সূরা বাক্বারাহ ১৮৩-১৮৪)
ইমাম বুখারী (৪৫০৫) ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেন,
لَيْسَتْ بِمَنْسُوخَةٍ هُوَ الشَّيْخُ الْكَبِيرُ وَالْمَرْأَةُ الْكَبِيرَةُ لا يَسْتَطِيعَانِ أَنْ يَصُومَا فَيُطْعِمَانِ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينًا
এ আয়াতটি মানসুখ (রহিত)নয়,বরং আয়াতটি অতি বৃদ্ধ নর ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য- যারা রোযা পালনে অক্ষম। তারা প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবেন।
প্রশ্নকারী দীনি ভাই, বলা বাহুল্য, যেহেতু একজন মিসকীনের জন্য সাহরী ও ইফতারের ব্যবস্থা করাটাও ‘ইতআম’ তথা দুই বেলা খানা খাওয়ানো; সুতরাং এর মাধ্যমেও ফিদিয়া আদায় হয়ে যাবে এবং এতে ফিদিয়া গ্রহণকারী মিসকীনের রোজারও কোনো ক্ষতি হবে না।
আরো পড়ুন: রোজার কাফফারা কত?
আরো পড়ুন: রোজা রেখে নামাজ না পড়লে রোজার কোনো সাওয়াব হবে কি?
আরো পড়ুন: রোজা রেখে পরনারীর প্রতি তাকালে রোজার ক্ষতি হয় কি?
আরো পড়ুন: মা-বোনকে আদর করে চুমো দিলে রোযার কোনও ক্ষতি হবে?
আরো পড়ুন: রমজানে দিনের বেলা স্বপ্নদোষ হলে কি রোজা ভেঙে যাবে?
আরো পড়ুন: ফরয গোসল সূর্য ওঠার পর করলে কি রোজা হবে?
আরো পড়ুন: রোজা রেখে স্ত্রীকে ধরে বা জড়িয়ে শোয়া যাবে?
আরো পড়ুন: হায়েজ ও নেফাসের কারণে রোজা রাখতে পারেনি; এখন কি করবে?
আরো পড়ুন: ঔষধ খেয়ে হায়েয বন্ধ রেখে রোযা রাখলে কি রোযা হবে?
আরো পড়ুন: ইনহেলার ব্যবহারে রোজা ভেঙ্গে যায় কি?
আরো পড়ুন: রোজাবস্থায় মলম ক্রিম লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে কি?
আরো পড়ুন: অবাঞ্ছিত লোম চল্লিশ দিন পর কাটা এবং রোজা রেখে কাটা যাবে কিনা?
আরো পড়ুন: বর্তমানের ইফতার পার্টি : নতুন ট্রেন্ড না নতুন জাহিলিয়াত?
আরো পড়ুন: সেহরি না খেয়ে রোজা হবে কিনা?
আরো পড়ুন: শুধু পানি দ্বারা সেহরি খাওয়া যাবে কি ?
আরো পড়ুন: মহিলারা কোথায় ই’তিকাফ করবেন–বাসায় না মসজিদে?
আরো পড়ুন: অসুস্থ ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে দিয়ে রোজা রাখালে আদায় হবে কি?