জিজ্ঞাসা–১৪৬৩: আমি আমার বউকে প্রেম করে বিয়ে করেছি। প্রেম করা অবস্থায় তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত ছিলাম তবে সহবাসে না। আমি তাকে সহবাস করার জন্য তাকে লুকিয়ে বিয়ে করি, এভাবে আমরা পাঁচ বছর সম্পর্ক রাখার পর,আবার পারিবারিকভাবে তাকে বিয়ে করি। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমার প্রথম বিয়ের কথা আমরা বা আমাদের যারা সাক্ষী ছিল তারা ছাড়া কেউ জানে না তাহলে আমি যে আবার ২য় বার বিয়ে করি সেটা কি ঠিক হলো বা শরিয়াহ কী বলে? ২ নং প্রশ্ন হলো, আমি যে সহবাস করার জন্য বিয়ে করেছিলাম সেটা ঠিক হলো কিনা?–ইয়াছিন জামান সৌরভ।
জবাব:
এক. ইসলামী শরীয়াহর দৃষ্টিতে কমপক্ষে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষীর সামনে প্রাপ্তবয়স্ক পাত্র ও পাত্রীর একজন প্রস্তাব দিলে এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নিলে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। এই হিসেবে যদি আপনারা দুই বা ততোধিক প্রাপ্তবয়স্ক সমঝদার সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ের ‘প্রস্তাব’ ও ‘প্রস্তাবগ্রহণ’ সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক শুদ্ধ হয়ে গেছে। তবে অভিভাবকবিহীন এই অসামাজিক অকৃতজ্ঞতাপূর্ণ ঘৃনিত কাজের জন্য আল্লাহর কাছে লজ্জিত হোন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। উপরন্তু এর পরে আবার ঘটা করে বিয়ে করাটা অনর্থক হয়েছে এবং শরীয়াহর সঙ্গে এক প্রকার উপহাসখেলা হয়েছে। সুতরাং এর জন্যও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
ذَٰلِكَۖ وَمَن يُعَظِّمۡ شَعَٰٓئِرَ ٱللَّهِ فَإِنَّهَا مِن تَقۡوَى ٱلۡقُلُوبِ
আর কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে সম্মান করলে এটা তার হৃদয়ের তাকওয়া হতে উদ্ভূত বা আল্লাহ সচেতনতার লক্ষণ। (সূরা আল-হাজ ৩২)
দুই. যদি তালাকের নিয়ত না থাকে তাহলে সহবাসের উদ্দেশে বিয়ে করা নিষেধ নয়। তবে এরকম নির্লজ্জ চিন্তা না করে নারী-পুরুষের উভয়ের উচিত বিয়ের মাধ্যমে নিজেকে হারামে লিপ্ত হওয়া থেকে বাঁচানোর নিয়ত করা। তাহলে উভয়ে এর দ্বারা ছাদাকার ছাওয়াব লাভ করবে। কারণ, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةً ، قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ ، أَيَأْتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ ، وَيَكُونُ لَهُ فِيهِ أَجْرٌ ؟ قَالَ : أَرأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي الْحَرَامِ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ ؟ فَكَذَلَكَ إِذا وَضَعَهَا فِي الْحَلالِ كَانَ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ.
তোমাদের সবার স্ত্রীর যোনিতেও রয়েছে ছাদাকা। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমাদের কেউ কি তার জৈবিক চাহিদা মেটাবে আর তার জন্য সে কি নেকী লাভ করবে? তিনি বললেন, ‘তোমরা কি মনে করো যদি সে ওই চাহিদা হারাম উপায়ে মেটাতো তাহলে তার জন্য কোনো গুনাহ হত না? (অবশ্যই হতো) অতএব তেমনি সে যখন তা হালাল উপায়ে মেটায়, তার জন্য নেকী লেখা হয়। (মুসলিম ১৬৭৪)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী