জিজ্ঞাসা–৭২০: আমার খালা সামির অত্যাচার এর জন্য আলাদা থাকতেন। তার সামি খালার ঠিকানায় তিন মাসে তিনটি তালাকের চিঠি পাঠান। খালা প্রথম চিঠিটা গ্রহণ করেন। পরের দুইটা চিঠি গ্রহণ করেন নাই। তাদের মধ্যে কি তালাক কার্যকর হয়েছে কিনা জানতে চাই। একটু তাড়াতাড়ি জানাবেন দয়া করে।–Mohua mou
জবাব: মুখে দিলে যেমনিভাবে তালাক হয় তেমনিভাবে তালাকনামা লিখে পাঠালেও তালাক পতিত হয়। সুতরাং উক্ত মহিলার উপর তিন তালাক পতিত হয়েছে। এক্ষেত্রে তিন মাসে তিনটি চিঠি পাঠানোর বিষয়টি মূল নয়; বরং যেই সময়ে উক্ত চিঠি লিখেছে কিংবা দস্তখত করেছে তখনই তালাক কার্যকর হয়ে গিয়েছে। কেননা, ফকিহগণ বলেন,
إن الكتابة يقع بها الطلاق، ولو كان الكاتب قادرا على النطق، فكما أن للزوج أن يطلق زوجته باللفظ، فله أن يكتب إليها الطلاق. واشترط الفقهاء: أن تكون الكتابة مُستَبينةً واضحة. ومعنى كونها مستبينة أي واضحة بحيث تقرأ في صحيفة ونحوها، ومعنى كونها مرسومة: أي مكتوبة بعنوان الزوجة
নিশ্চয় চিঠি দ্বারাও তালাক পতিত হয়। যদিও লেখক বলতে সক্ষম হয়। সুতরাং যেমনিভাবে স্বামী মুখে তালাক দিতে পারে, তেমনিভাবে লিখিতভাবেও দিতে পারে। তবে লিখিত-তালাকের ক্ষেত্রে ফকিহগণ শর্ত দিয়েছেন, লেখাটি বোধগম্য-স্পষ্ট হতে হবে। অর্থাৎ কাগজ বা এজাতীয় কিছুতে পরিষ্কার ভাষায় লিখতে হবে। পাশাপাশি নিজের স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখতে হবে। (ফিকহুস সুন্নাহ ৩/১৬৫)
সুতরাং উক্ত মহিলা তার উক্ত স্বামীর সাথে ঘরসংসার করা আর বৈধ হবে না। হ্যাঁ, ইদ্দত শেষে যদি উক্ত মহিলার অন্যত্র বিয়ে হয়। সেখান থেকে কোনো কারণে তালাকপ্রাপ্তা হয় বা তার স্বামীর মারা যায় তাহলে ইদ্দত পালন শেষে তাকে উক্ত স্বামী দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারবেন। এছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই। (কিতাবুন নাওয়াজেল-৯/৫২১-৫২৩)। আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। (সূরা বাকারা ২৩০)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী