জিজ্ঞাসা–১৪৪২: স্বামীকে নাম ধরে ডাকা যাবে কি? ‘তুমি’ করে বললে গুনাহ হবে কি?– সুলতানা।
এক. স্বামী-স্ত্রী যদি সমবয়সী হয় কিংবা বন্ধুসুলভ হয় এবং স্ত্রী যদি স্বামীর নাম ধরে ডাকলে কিংবা ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করলে মনে কষ্ট না পায়, তাহলে নাম ধরে ডাকলে কিংবা ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করলে কোনো সমস্যা নেই। কেননা ইসলামে এর নজির আছে। যখন আল্লাহর রাসূল ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তার স্ত্রী হাজেরা এবং শিশু পুত্র ইসমাইলকে মক্কার জনমানবহীন প্রান্তরে রেখে চলে যাচ্ছিলেন তখন পেছন থেকে তার স্ত্রী তাকে ডাক দিয়েছিলেন এভাবে;
يَا إِبْرَاهِيمُ أَيْنَ تَذْهَبُ وَتَتْرُكُنَا بِهَذَا الْوَادِي الَّذِي لَيْسَ فِيهِ إِنْسٌ وَلَا شَيْءٌ ؟
হে ইবরাহীম, তুমি আমাদেরকে এমন জনমানবহীন উপত্যকায় রেখে কোথায় যাচ্ছ? (সহীহ বুখারী ৩১১৩)
দুই. পক্ষান্তরে স্ত্রী যদি স্বামীর নাম ধরে ডাকলে কিংবা ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করলে মনে কষ্ট পায়, তাহলে নাম ধরে ডাকা কিংবা ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। বরং তখন এমন শব্দের মাধ্যমে ডাকা উচিত—যেটা সম্মান বোঝাবে। যেমন—হে আমার সর্দার, অমুকের বাবা ইত্যাদি অথবা সম্মানসূচক পেশার সঙ্গে সংযুক্ত করে ডাকবে। যেমন—ইমাম সাহেব, ডাক্তার সাহেব ইত্যাদি)। (রাদ্দুল মুহতার আলাদ দুররিল মুখতার ০৬/৪১৮)
কেননা হাদিস শরিফে এসেছে, একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল ﷺ তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে। নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, فانظري أين أنت منه، فإنما هو جنتك ونارك হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম। (মুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩৪১ হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ১৪৭০৬)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী