নামাজের পরের জিকিরগুলো হাঁটা-চলা অবস্থায় কিংবা কাজে ব্যস্ত অবস্থায় করা…

জিজ্ঞাসা–১০৬০: হুজুর সাহেব, আমি কাজে খুব বিজি থাকি এই জন্যে ফজর আর মাগরিবের নামাযের পরে যে আমলগুলা করতে হয় সেগুলা কী আমি হাঁটা অবস্থায় বা কাজ করা অবস্থায় করতে পারবো? দয়া করে একটু বলে দিলে খুব খুশি হতাম। আল্লাহ আপনার নেক হায়াত দান করুন আমিন।–Sharif

জবাব: পারবেন। কেননা, জিকির-আজকার সর্বাবস্থায় করা যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىَ جُنُوبِهِمْ

যাঁরা দাঁড়িয়ে, বসে, ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহর জিকির করে…। (সুরা আলি ইমরান ১৯১)

অন্যত্র বলেন,

فَإِذَا قَضَيْتُمُ الصَّلاَةَ فَاذْكُرُواْ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِكُمْ

অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। (সূরা নিসা ১০৩)

আল্লামা মানসুর ইবনু ইউনুস আলবুহুতি আলহাম্বলি রহ. বলেন,

يُسَنُّ ذِكْرُ اللَّهِ وَالدُّعَاءُ وَالِاسْتِغْفَارُ عَقِب الصَّلَاةِ الْمَكْتُوبَةِ كَمَا وَرَدَ فِي الْأَخْبَارِ . قَالَ ابْنُ نَصْرِ اللَّهِ فِي الشَّرْحِ : وَالظَّاهِرُ أَنَّ مُرَادَهُمَا أَنْ يَقُولَ ذَلِكَ وَهُوَ قَاعِدٌ ، وَلَوْ قَالَهُ بَعْد قِيَامِهِ وَفِي ذَهَابهِ فَالظَّاهِرُ : أَنَّهُ مُصِيبٌ لِلسُّنَّةِ أَيْضًا ، إذْ لَا تَحْجِيرَ فِي ذَلِكَ . وَلَوْ شُغِلَ عَنْ ذَلِكَ ، ثُمَّ تَذَكَّرَهُ فَذَكَرَهُ ، فَالظَّاهِرُ حُصُولُ أَجْرِهِ الْخَاصِّ لَهُ أَيْضًا إذَا كَانَ قَرِيبًا لِعُذْرٍ ، أَمَّا لَوْ تَرَكَهُ عَمْدًا ثُمَّ اسْتَدْرَكَهُ بَعْدَ زَمَنٍ طَوِيلٍ فَالظَّاهِرُ فَوَاتُ أَجْرِهِ الْخَاصِّ ، وَبَقَاءِ أَجْرِ الذِّكْرِ الْمُطْلَقِ لَهُ

আল্লাহ তাআলার জিকির, দোয়া ও ইস্তেগফার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে করা সুন্নাত, যেমনটি হাদিসগুলোতে এসেছে। ইবনু নাসরুল্লাহ এর ব্যাখ্যায় বলেন, বলা বাহুল্য, এর দ্বারা উদ্দেশ্য, বসা অবস্থায় পড়বে। আর যদি বসা থেকে উঠে যাওয়ার পর কিংবা চলা-ফেরা অবস্থায় পড়ে তাহলে সেও সুন্নাতের সাওয়াব লাভকারী হবে। কেননা, এ বিষয়ে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। আর যদি ভুলে যায় তারপর স্মরণ হওয়ার পর পড়ে তাহলে বলা বাহুল্য যে, সেও বিশেষ সাওয়াব পাবে। কেননা, এটাও এক প্রকার ওজর। কিন্তু যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয় তারপর বেশ কিছুক্ষণ পর পড়ে তাহলে বাহুল্য যে, বিশেষ সাওয়াব তার ছুটে গেছে। তবে তখনও সে সাধারণ জিকিরের সাওয়াব পাবে। (কাশশাফুল কিনা’ ১/৩৬৫)

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × two =