ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়ার আমল

জিজ্ঞাসা–১৪৯১: আসসালামুআলাইকুম। ঋণ ও অসচ্ছলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন আমল বলে দিলে উপকৃত হতাম।–মুহাম্মাদ মাহাফুজ।

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, আল্লাহর কাছে আপনার ঋণমুক্তির জন্য দোয়া করি। আর আপনার প্রতি আমার উপদেশ হল,আপনি পার্থিব প্রচেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করুন। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন যে, তিনি আপনাকে ঋণের ভার থেকে মুক্ত করবেন। মনে রাখবেন, আল্লাহর সঙ্গে বান্দা যেমন ধারণা রাখে আল্লাহ তার সঙ্গে তেমন আচরণ করেন।

আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনার উপায় হিসবে নিম্নে হাদীস থেকে দু’টি দোয়া আপনার জন্য পেশ করছি। ওলামায়েকেরামের অভিমত হলো, দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এই দোয়াগুলো পাঠ করে আল্লাহর কাছে ঋণমুক্তির জন্য সাহায্য কামনা করলে, আল্লাহতায়ালা ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে সব ধরনের ঋণ থেকে মুক্ত করেন।

 اللَّهُمَّ اكْفِنِي بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكِ عَمَّنْ سِوَاكَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাকফিনী বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনী বিফাযলিকা আ’ম্মান সিওয়াক।

অর্থ: হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রিজিক আমার জন্য যথেষ্ট কর। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারো মুখাপেক্ষী করো না এবং স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে স্বচ্ছলতা দান কর।

একবার হযরত আলী রাযি.-এর কাছে এক ব্যক্তি তার ঋণ পরিশোধের জন্য কিছু সাহায্য চাইলেন। এসময় আলী রাযি. তাকে বললেন, আমি কি তোমাকে কয়েকটি শব্দ শিক্ষা দেব না, যা আমাকে রাসূলুল্লাহ শিক্ষা দিয়েছেন? যদি তুমি এটা পড় তাহলে আল্লাহই তোমার ঋণমুক্তির ব্যাপারে দায়িত্ব নিবেন। যদি তোমার ঋণ পর্বতসমানও হয়।

এরপর আলী রাযি. ওই ব্যক্তিকে উক্ত দোয়া পড়তে বলেছিলেন। (তিরমিযি ৩৫৬৩, আহমদ ১৩২১)

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘উযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-‘আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন দ্বালা‘য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজা-ল।

অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে।”

হযরত আনাস রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূল চিন্তাযুক্ত অবস্থায় উক্ত দোয়া পড়তেন। (বুখারী ২৮৯৩)

উল্লেখ্য, বাংলা উচ্চারণ পাঠকের সুবিধার্থে দেয়া হয়েছে। মূলতঃ বিশুদ্ধ উচ্চারণ এভাবে লেখার মাঝে আসে না। সুতরাং একজন আলেমের কাছ থেকে বিশুদ্ধ উচ্চারণে দোয়াগুলো শিখে নিতে হবে। তারপর আমল করতে হবে।

والله أعلم بالصواب

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 7 =