জিজ্ঞাসা–১৭৪৩: মুফতি সাহেবের কাছে একটি প্রশ্ন, কবরের পাশে ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্য দেখে কোরআন পড়া যাবে কি না?–জানালে উপকৃত হবো।–আব্দুল মতিন।
জবাব: কবরের পাশে ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্য দেখে কোরআন তেলাওয়াত করা জায়েয। নিম্নোক্ত বর্ণনাগুলো থেকেও এর বৈধতা বোঝা যায় :
১. আবদুর রহমান ইবনে আলা ইবনে লাজলাজ থেকে বর্ণিত, তার পিতা সন্তানদেরকে বলেছেন, আমি মৃত্যুবরণ করলে তোমরা আমাকে কবরে রাখবে এবং بسم الله وعلى سنة رسول الله বলে সুন্দরভাবে মাটি বিছিয়ে দিবে। তারপর আমার মাথার কাছে সূরা বাকারার শুরু ও শেষাংশ পাঠ করবে। আমি ইবনে উমর রা.-কে তা পছন্দ করতে দেখেছি। (তারিখে ইবনে মায়ীন, দূরী সংকলিত ২/৩৭৯-৩৮০)
عبد الرحمن بن العلاء بن اللجلاج، عن أبيه أنه قال لبنيه: إذا أدخلت القبر فضعوني في اللحد، وقولوا: بسم الله وعلى سنة رسول الله، وسنوا علي التراب سنا، واقرءوا عند رأسي أول البقرة وخاتمتها، فإني رأيت ابن عمر يستحب ذلك.
ইমাম বায়হাকী রাহ. (৪৫৮হি.) বলেন, هذا موقوف حسن‘এর সনদ হাসান’। ইমাম নববী রাহ.ও এর সনদকে হাসান বলেছেন। দ্রষ্টব্য : আদদাআওয়াতুল কাবীর ২/২৯৭; নাতাইজুল আফকার ৪/৪২৬
২. শাবী থেকে বর্ণিত, আনসার (সাহাবীগণ) মাইয়িতের কাছে সূরা বাকারা তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১০৯৫৩
حدثنا حفص بن غياث، عن المجالد، عن الشعبي، قال: كانت الأنصار يقرؤون عند الميت بسورة البقرة.
ইবনে হাজার রাহ. বলেন, মুজালিদ যয়ীফ হলেও পরিত্যক্ত নন; বরং ইমাম মুসলিম রাহ. তার হাদীস সমর্থক পর্যায়ে এনেছেন। (নাতাইজুল আফকার ৪/৩০৯)
৪. আবু উমায়্যা আযদী থেকে বর্ণিত, জাবির ইবনে যায়েদ রাহ. মাইয়িতের কাছে সূরা রা‘দ তিলাওয়াত করতেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১০৯৫৭
حدثنا وكيع، عن حسان بن إبراهيم، عن أمية الأزدي، عن جابر بن زيد، أنه كان يقرأ عند الميت سورة الرعد.
ইবনে হাজার রাহ. বলেন, سنده صحيح ‘এর সনদ সহীহ’। (নাতাইজুল আফকার ৪/৩১২)
এ বর্ণনাগুলোর মধ্যে প্রথমটিতে কিছু দুর্বলতা থাকলেও সামগ্রিকভাবে এটা প্রমাণিত হয় যে, কুরআন তিলাওয়াত মাইয়িতের উপকারে আসে।
ইমাম ইবনে কুদামা রাহ. তিলাওয়াতের সওয়াব রেসানির বৈধতার দলীল আলোচনা করতে গিয়ে বলেন,
وأنه إجماع المسلمين، فإنهم في كل عصر ومصر يجتمعون ويقرؤون القرآن، ويهدون ثوابه إلى موتاهم، من غير نكير
এতে মুসলমানদের ইজমা আছে। প্রত্যেক যুগে প্রত্যেক শহরে তারা সমবেত হয়ে কুরআন তিলাওয়াত করে সওয়াব রেসানি করেছে। এতে কেউ কোনো আপত্তি করে নি। (আলমুগনী ৩/৫২২)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী