জোরে জিকির না আস্তে জিকির–কোনটি উত্তম?

জিজ্ঞাসা–৯৩৪: কোন্ পদ্ধতিতে যিকর করা উত্তম—উচ্চস্বরে না নীচুস্বরে?–আতাউর রহমান।

জবাব: শাইখুল মুফতি তাকী উসমানী দা. বা. -কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে তিনি লিখেছেন–

‘আলোচ্য বিষয়ে মুহাক্কিক আলেমদের দৃষ্টিভঙ্গি এই যে, উভয় পদ্ধতির জিকির জায়েয। তবে পরিবেশ ও স্থানভেদে ফজিলতে ভিন্নতা আছে। অনেক পরিবেশে উচ্চস্বরে জিকির করা উত্তম এবং অনেক পরিবেশে নীচুস্বরে জিকির করা উত্তম। সুতরাং যদি কোনো হক্কানী পীর মুরিদের অবস্থা নির্ণয় করে তাকে উচ্চস্বরে জিকির করার অযীফা দেন, তাহলে তার জন্য উচ্চস্বরে জিকির করা জায়েয। তবে এক্ষেত্রে দুটি শর্ত আছে। (এক) উচ্চস্বরে জিকির করার কারণে যেন কারো ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটে কিংবা এটি যেন কারো যৌক্তিক কষ্টের ‘কারণ’ না হয়। (দুই) উচ্চস্বরে জিকির মৌলিক ইবাদত মনে করা যাবে না; বরং এটাকে চিকিৎসা হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। (ফাতাওয়া উসমানি ১/২৬০)

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّن مَّنَعَ مَسَاجِدَ اللّهِ أَن يُذْكَرَ فِيهَا اسْمُهُ

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর মসজিদসমূহে আল্লাহর নামের জিকির করা থেকে বাধা দেয়, সে বড় জালিম।’ (সূরা বাকারা ১১৪)

বলা বাহুল্য, জিকির থেকে বাধা প্রদান করা তো তখনই সম্ভব হবে যখন জিকির সম্পর্কে অবহিত হবে।

এছাড়া সহিহ মুসলিমে আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ  নামাযের পর উচ্চস্বরে পড়তেন–

 لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

‘আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার নেই। সকল ক্ষমতা এবং প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতা রাখেন।’ (মুসলিম 1য১/১২১৮)

অনুরূপভাবে আরো কিছু বর্ণনা থেকে উচ্চস্বরে জিকির করার প্রমাণ পাওয়া যায়। বিস্তারিত প্রমাণাদি হযরত থানবী রহ. ইমদাদুল ফাতাওয়াতে কিতাবুস সুলূক-এর অধীনে লিপিবদ্ধ করেছেন।

والله أعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 3 =