বাবা-মা নফল রোজা রাখতে না দিলে করণীয়

জিজ্ঞাসা–১৮২২: মা-বাবা যদি সুন্নত-নফল রোজা পালনে বাধা দেয় বলে শরীরের ক্ষতি হবে তাও যদি পালন করি তাহলে কি জায়েজ হবে? এমন অবস্থায় বাবা-মার কথা শুনবো নাকি রোজা পালন চালিয়ে যাবো?–বগুড়া থেকে।

জবাব:

১. মা-বাবা যদি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বর্জন করতে বলেন তাহলে সে ক্ষেত্রে তাঁদের আনুগত্য করা জায়েয হবে না।
২. যদি তাঁরা নফল-মুস্তাহাব পুরোপুরি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন তাহলে তাঁদের এই নির্দেশ মানা যাবে না। কেননা, এর মাধ্যমে তাঁদের ইসলামের প্রতি অবহেলা প্রকাশ পায় এবং এই নির্দেশের মান্য করার মাঝে তাঁদের কোনো উপকার নিহিত নেই।
৩. যদি তাঁরা নফল-মুস্তাহাব পুরোপুরি নয় বরং বিশেষ কোনো যৌক্তিক কারণে নির্দিষ্ট কোনো নফল-মুস্তাহাব ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন তাহলে এক্ষেত্রে তাঁদের হুকুম মানা ওয়াজিব। যেমন, সন্তানের শরীর দুর্বল তাই তাকে নফল রোজা না রাখার নির্দেশ দিলেন কিংবা বাবা বা মায়ের কোনো প্রয়োজনে সন্তানকে নফল আমল ছেড়ে দিয়ে ওই কাজটি করে দিতে বললেন– তাহলে এই হুকুম মানা সন্তানের উপর ওয়াজিব। (আলফাতাওয়া আলকুবরা ৫/৩৮১)
হাসান বসরী রহ. বলেন,

إن منعتْه أمُّه عن العشاء في الجماعة شفقة : لم يطعها

যদি মা সন্তানের প্রতি মায়া দেখিয়ে ইশার জামাতে শরিক হতে বারণ করে তাহলে এ ক্ষেত্রে তাঁর আনুগত্য করা যাবে না। (বুখারী ১/২৩০)
ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল রহ.-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বাবা যদি সন্তানকে জামাতে নামায আদায় করা থেকে নিষেধ করে তাহলে কী করবে? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, এ জাতীয় ক্ষেত্রে বাবার কথা অমান্য করবে। (গিযাউল লুবাব ১/৩৮৫)
তাঁকে আরো জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এক ব্যক্তি তাঁর সন্তানকে আদেশ করেছে যে, ফরয নামায ছাড়া কোনো নামায পড়বে না। এখন সন্তানের করণীয় কী? তিনি উত্তর দিয়েছেন, এই হুকুম অমান্য করবে এবং নফল পড়বে। (গিযাউল লুবাব ১/৩৮৪)

والله أعلم بالصواب