বিয়ের দাওয়াতে উপহার দেয়া যাবে কি?

জিজ্ঞাসা–১২৯৮: আসসালামু আলাইকুম। বিয়ের দাওয়াত খেয়ে টাকা বা উপঢৌকনাদি দেয়ার নিয়ম কী শরীয়তে আছে? যদি খুশিমনে উপহার দেয়া হয় তার ক্ষেত্রে নিয়ম কি?–আদিল হোসেন।

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

এক. প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, বিয়ে-শাদি আকীকা কিংবা এ জাতীয় কোনো বৈধ অনুষ্ঠানে কেউ যদি আমন্ত্রিত হয় তখন সেখানে কোনো উপহারসহ উপস্থিত হওয়া নিষেধ নয়। কেননা, উপহার প্রদান এবং অন্যের আনন্দে শরিক হওয়া মৌলিকভাবে এ দুটোই ইসলামসমর্থিত; বরং এ দুটি বিষয় ইসলামে কাঙ্ক্ষিতও।

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

تَهَادَوْا فَإِنَّ الْهَدِيَّةَ تُذْهِبُ وَغَرَ الصَّدْرِ

তোমরা পরস্পরে হাদিয়া বিনিময় করো। এর দ্বারা অন্তরের সঙ্কীর্ণতা ও হিংসা-বিদ্বেষ দূর হয়ে যায়। (মুসনাদে আহমদ ৯২৫০)

অপর হাদীসে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

حَقّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ خَمْسٌ رَدّ السّلاَمِ وَعِيَادَةُ الْمَرِيضِ وَاتِّبَاعُ الْجَنَائِزِ وَإِجَابَةُ الدّعْوَةِ وَتَشْمِيتُ الْعَاطِسِ.

এক মুসলমানের ওপর আরেক মুসলমানের পাঁচটি অধিকার- ১. সালামের জবাব দেওয়া, ২. অসুস্থ হলে দেখতে যাওয়া, ৩. জানাযায় শরিক হওয়া, ৪. দাওয়াত করলে তা রক্ষা করা, ৫. হাঁচির জবাবে দুআ পড়া। (সহীহ বুখারী ১২৪০)

সুতরাং সামাজিক চাপ নয়; হাদিয়া আদান-প্রদান হওয়া উচিত খুশি মনে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে।

দুই. কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমরা এই সুন্দর ও স্বাভাবিক বিষয়টিকে একপ্রকার সামাজিক বাধ্যবাধকতা বানিয়ে ফেলেছি। এ বাধ্যবাধকতা দুই দিক থেকেই। যিনি আমন্ত্রিত, তিনি ভাবেন-একটি মানসম্মত উপহার ছাড়া সেখানে যাওয়া যাবে না। আবার যারা আমন্ত্রক, তারা অতিথিদের বরণ করার তুলনায় উপহার গ্রহণের প্রতিই অধিক মনোযোগী হয়ে থাকেন। উপহার গ্রহণের জন্য থাকে ভিন্ন ব্যবস্থাপনা। এবং সেটাও অনেকটা এমনভাবে, যেন চক্ষুলজ্জার কারণে হলেও কেউ উপহার প্রদান না করে অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ করতে না পারেন। যেন এটাই এখন সামাজিকতা। অথচ জাতীয় সামাজিকতা পরিত্যাজ্য। কেননা, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

أَلَا لا يَحِلُّ مالُ امرِىءٍ إلا بِطِيبِ نفسٍ منه

খবরদার! একজন মুসলমানের যে কোনো জিনিস তার মনের সন্তুষ্টি ছাড়া অপর মুসলমানের জন্য হালাল নয়। (সহিহ আলজামি’ ৭৬৬২)

والله اعلم بالصواب

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 4 =