জিজ্ঞাসা–৫৮২: আসসালামু আলাইকুম। কোন কাজ করতে গিয়ে অস্থির (মানসিক) না হয়ে ধীর-স্থির হওয়ার কোন আমলের কথা যদি বলতেন। ইদানীং নামাযেও এরকম হচ্ছে, তাড়াহুড়ো করি।–মো. জামিউল।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
প্রিয় দীনি ভাই, মনের অস্থিরতা দূর করার সবচে’ উত্তম চিকিৎসা হল- ১. আল্লাহর যিকির করা ২. কোরআন তেলাওয়াত করা ৩. নামাযের পাবন্দি করা এবং ৪. অলস সময় অতিবাহিত না করা।
১. কেননা, যিকির সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়। (সূরা রা’দ ২৮)
২. কোরআন সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
نُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ وَلاَ يَزِيدُ الظَّالِمِينَ إَلاَّ خَسَارًا
আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়। (সূরা বনু ইস্রাঈল ৮২)
৩. নামায সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ الْإِنسَانَ خُلِقَ هَلُوعًا إِذَا مَسَّهُ الشَّرُّ جَزُوعًا وَإِذَا مَسَّهُ الْخَيْرُ مَنُوعًا إِلَّا الْمُصَلِّينَ الَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَاتِهِمْ دَائِمُونَ
মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে। যখন তাকে অনিষ্ট স্পর্শ করে, তখন সে হা-হুতাশ করে। আর যখন কল্যাণপ্রাপ্ত হয়, তখন কৃপণ হয়ে যায়। তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা নামায আদায়কারী। যারা তাদের নামাযে সার্বক্ষণিক কায়েম থাকে। ( সুরা মা’য়ারিজ ১৮-২৩ )
হাদিসে এসেছে, وكان –ﷺ– إذا حزبه أمرٌ فزِعَ إلى الصلاة রাসুলুল্লাহ ﷺ যখন পেরেশান হতেন নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন। (আবু দাউদ ১৩১৯)
রাসুলুল্লাহ ﷺ বেলাল রাযি.-কে বলতেন, أقم الصلاة أرحنا بهاনামাযের ইকামত দাও, এর মাধ্যমে আমাকে প্রশান্তি দাও। (আবু দাউদ ৪৯৮৫)
নামাযে মনোযোগ ধরে রাখার জন্য পড়ুন, জিজ্ঞাসা নং–৫৪, জিজ্ঞাসা নং–২৪১।
৪. অলস সময় অতিবাহিত না করা–এটি এমন রোগ যা বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ও অস্বস্তিকর চিন্তা টেনে আনে। যার কারণে মন অস্থির হয়ে ওঠে। সুতরাং যখনই আপনার মঝে অস্থিরতা দেখা দিবে তখনই মনে না চাইলেও মনে মনে যিকির শুরু করে দিবেন কিংবা সঙ্গে সঙ্গে অজু করে নামায ও কোরআন তেলাওয়াত শুরু করে দিবেন। দেখবেন, ধীরে ধীরে অস্থিরতা দূর হয়ে যাবে এবং মনে স্থিরতা ও প্রশান্তি চলে আসবে।
পাশাপাশি নিম্নের দোয়াটিও পড়তে পারেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, পেরেশানগ্রস্থ লোকের দোয়া হলো–
اَللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو، فَلاَ تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ، وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ
অর্থ, হে আল্লাহ! আমি আপনার রহমাতের আশা করি। অতএব, আপনি মুহুর্তের জন্যও আমাকে আমার মনের নিকট সোপর্দ করে দিবেন না এবং আমার সার্বিক অবস্থা সংশোধন করে দিন। আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নাই। (আল আদাবুল মুফরাদ ৭১২)
পরিশেষে আমরা আপনার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, তিনি যেন আপনার অন্তরে প্রশান্তি ও স্থিরতা দান করেন। নিশ্চয় তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
আরো পড়ুন– ☞ আমি ডিপ্রেশনে ভুগছি; কী করতে পারি? ☞ মনের ভয় কিভাবে দূর করবেন? ☞ মনের সাহস বাড়ানোর আমল ☞ শুচিবায়ু থেকে মুক্তির উপায় কী? ☞ সুস্বাস্থ্যের জন্য ১০ আমল ☞ অর্শ রোগ (piles) এর কোরঅানি চিকিৎসা ☞ বদ নজর দূর করার উপায় কি? ☞ সন্তান লাভের আমল ও দোয়া ☞ যাদু কাটানোর আমল ☞ পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করার আমল ☞ পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার দোয়া ও আমল ☞ গর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়া
ভাই আপনার ওয়েবসাইট থেকে প্রশ্ন গুলার উত্তর কপি করে আমরা কি আমাদের গ্রুপ এ উত্তর প্রদান করতে পারব? এক্ষেত্রে হয়ত আপনার নাম নাও উল্লেখ করতে পারি। জাযাকাল্লাহু খায়রন।
কোন প্রকার পরিবর্তন ছাড়া কপি করতে পারেন। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।
যদি এসব দূয়া বাংলা উচ্চারণসহ দিতেন আমার জন্য অনেক ভালো হতো
very important post