যাদু কাটানোর আমল

জিজ্ঞাসা–৪০৩: আসসালামু আলাইকুম। বর্তমানে আমাদের সমাজে দেখা যায় যে, কালো যাদু বা তাবীজ কাটানোর জন্য নাভী খোলা হয়। এগুলো কি শরীয়তে জায়েয আছে কি? আর তাবীয কাটানোর সহিহ পদ্ধতি কি?–নোমান।

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

এক- পুরুষের সতর হল নাভির নিচ থেকে নিয়ে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত। অর্থাৎ, নাভি সতরের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং হাঁটু সতরের অন্তর্ভুক্ত।  সুতরাং পুরুষ প্রয়োজনে নাভি খুলতে পারবে, তবে নাভির নীচের অংশ কাউকে দেখাতে পারবে না। এর দলিল হচ্ছে,

 فَلَا يَنْظُرَنَّ إِلَى شَيْءٍ مِنْ عَوْرَتِهِ فَإِنَّ كُلَّ شَيْءٍ أَسْفَلَ مِنْ سُرَّتِهِ إِلَى رُكْبَتِهِ مِنْ عَوْرَتِهِ

কোন ব্যক্তি যেন কারো সতরের দিকে না তাকায়। নিশ্চয় নাভির নিচ থেকে নিয়ে হাঁটু নিচ পর্যন্ত সব কিছুই সতর। (সুনানে কুবরা লিল বাইহাকী ৩২৩৫)

পক্ষান্তরে মহিলাদের হাত, পা, মুখ ছাড়া পূর্ণ শরীরই সতর। কেননা, রাসূলুল্লাহ বলেছেন, الْمَرْأَةُ عَوْرَة নারীর আপাদমস্তক সতর। ( তিরমিজী ১১৭৩) সুতরাং কোন নারী আরেকজনের সামনে নাভি খুলতে পারবে না।

দুই- যাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। এর পদ্ধতি হচ্ছে- যাদুতে আক্রান্ত রোগীর উপর অথবা কোন একটি পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা আরাফ, সূরা ইউনুস, সূরা ত্বহা এর যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো পড়বে। এগুলোর সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে এবং রোগীর জন্য দোয়া করবে। বিশেষতঃ যে দুআটি রাসূলুল্লাহ ﷺ  থেকে সাব্যস্ত হয়েছে:

اللَّهُمَّ ربَّ النَّاسِ، أَذْهِب الْبَأسَ، واشْفِ، أَنْتَ الشَّافي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفاءً لاَ يُغَادِرُ سقَماً

(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)

জিব্রাইল আ. নবী -কে যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন সেটাও পড়া যেতে পারে। সে দুআটি হচ্ছে-

بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ , مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنٍ أَوْ حَاسِدٍ , اللَّهُ يَشْفِيكَ بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ

(অর্থ- আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।)

এই দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন।

আলেমগণ বলেছেন, এ দোয়াগুলো পড়ে পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি সে পানি পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে প্রয়োজনমত একবার বা একাধিক বার গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে।

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
আরো পড়ুন–
পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করার আমলগর্ভবতী মায়ের আমল ও দোয়ামনের সাহস বাড়ানোর আমলপরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার দোয়া ও আমলঋণ পরিশোধের দোয়ামনের ভয় কিভাবে দূর করবেন?

১ টি মন্তব্য

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × two =