জিজ্ঞাসা–১০৩৬: আসসালামু আলাইকুম। প্রাণপ্রিয় ওস্তাদজী, মা বাবার কাজা নামাজ ও কাজা রোজা যা অসুস্থ থাকার কারণে কাজা হয়ে গেছে। তার কাফফারা আদায় করা সন্তানের উপর কর্তব্য কি না? দলিলসহ জানাবেন।–আনোয়ার।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
এক. কুরআন মজিদে রোজার ফিদিয়ার কথা স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু নামাযের ফিদিয়ার ব্যপারে কুরআন-সুন্নাহয় স্পষ্ট কোন দিক-নির্দেশনা পাওয়া যায় না। তবে ইমাম মুহাম্মাদ রহ. রোজার ফিদিয়ার উপর কিয়াস করে নামাযের ফিদিয়ার বিধান নির্ধারণ করেছেন এবং বলেছেন, আশা করা যায় যে, এর মাধ্যমে মানুষ তার দায় থেকে নিষ্কৃতি লাভ করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ
‘আর যাদের জন্য তা (সিয়াম পালন) কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদিয়া তথা একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। (সূরা বাক্বারা ১৮৪)
ইবনে আব্বাস রাযি. বলেছেন,
هُوَ الشَّيْخُ الْكَبِيرُ وَالْمَرْأَةُ الْكَبِيرَةُ لا يَسْتَطِيعَانِ أَنْ يَصُومَا فَيُطْعِمَانِ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينًا
এরা হল অশীতিপর বৃদ্ধ নর ও নারী। যারা রোযা পালন করতে সক্ষম নয়। তারা প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াবে। (বুখারী ৪৫০৫)
দুই. যদি মৃত ব্যক্তি তার সম্পদ থেকে তার নামায রোজার কাফফারা আদায়ের জন্য অসিয়ত করে যায়, আর তার নিজের মালও থাকে। তাহলে তার এক তৃতীয়াংশ সম্পদ থেকে কাফফারা আদায় করা সন্তানদের উপর ওয়াজিব।
আর যদি তার কোন সম্পদ না থাকে, বা সে মাল রেখে গেছে কিন্তু কোন কাফফারা আদায়ের অসিয়ত করে যায়নি। তাহলে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কাফফারা আদায় করা আত্মীয়-স্বজন কিংবা সন্তানদের উপর জরুরী নয়। তবে স্বজনদের কাফফারা আদায় করে দেয়াই উত্তম। এটা মৃত ব্যক্তিকে দায়মুক্ত করার জন্য তাদের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ।
কাফফারার পরিমাণ হল, প্রতিদিন বিতরসহ ছয় ওয়াক্ত নামায হিসেব করে প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য পৌনে দুই সের গম বা আটা অথবা এর বাজার মূল্য গরীব মিসকিনকে মালিক বানিয়ে দিতে হবে। অথবা প্রতি ওয়াক্তের বদলে একজন গরীবকে দুই বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়াতে হবে। (ফতাওয়া শামী-২/৭২)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী