জিজ্ঞাসা–৩৯৫: আমার প্রশ্ন হল, যৌতুক এর টাকার জামা পরে নামাজ বা অন্যান্য আমাল করা যাবে কি ? আল্লাহর কাছে কি গ্রহণযোগ্য হবে? Md Shahriair Lemon
জবাব: প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, আল্লাহর ইবাদত করতে হয় ভয় ও আশার সঙ্গে। আল্লাহ বলেন,
وَادْعُوهُ خَوْفًا وَطَمَعًا
ভয় ও আশার সঙ্গে তাঁকে ডাক। (সূরা আ’রাফ ৫৫)
ইমাম কুরতুবী রহ. এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন যেন মানুষ সতর্ক থাকে, ভীত থাকে এবং আল্লাহর প্রতি আশাবাদী থাকে। মানুষের মধ্যে ভয় ও আশা যেন একটি পাখির দুটো ডানার মতো। যে ডানাদ্বয় তাকে সরল পথে অবিচল রাখবে। যদি কেউ শুধু একটি ডানার উপর নির্ভর করে তাহলে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
نَبِّئْ عِبَادِي أَنِّي أَنَا الْغَفُورُ الرَّحِيمُ . وَأَنَّ عَذَابِي هُوَ الْعَذَابُ الْأَلِيمُ
আপনি আমার বান্দাদেরকে জানিয়ে দিন যে, আমি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু। এবং এটাও জানিয়ে দিন যে, আমার শাস্তি বড় যন্ত্রনাদায়ক। (সূরা হিজর ৪৯, ৫০) [ তাফসিরে কুরতুবী, ৭/২২৭]
সুতরাং আমরা উক্ত ব্যক্তিকে ভয় ও আশার সঙ্গে ইবাদত করার উপদেশ দিচ্ছি। কেননা, ইবাদতের জন্য হালাল খাবার ও হালাল পোশাক গ্রহণ করা জরুরী।
সহিহ মুসলিমে (১০১৫) আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ اللَّهَ طَيِّبٌ لا يَقْبَلُ إِلا طَيِّبًا ، وَإِنَّ اللَّهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ ، فَقَالَ : ( يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنْ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ ) ، وَقَالَ : ( يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ ) ، ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ يَا رَبِّ يَا رَبِّ ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ ) قال ابن رجب رحمه الله : فأكل الحلال وشربه ولبسه والتغذي به سبب موجِبٌ لإجابة الدعاء
“হে লোকসকল! নিশ্চয় আল্লাহ ভাল। তিনি ভাল নয় এমন কিছু গ্রহণ করেন না। তিনি মু’মিনদের সেই আদেশই দিয়েছেন, যে আদেশ তিনি দিয়েছিলেন রাসূলগণকে। তিনি বলেন: “হে রাসূলগণ! আপনারা ভাল খাবার গ্রহণ করুন এবং নেক আমল করুন। নিশ্চয় আপনারা যা কিছু আমল করেন সে সম্পর্কে আমি সম্যক অবগত”। [সূরা মুমিনূন, আয়াত: ৫১] তিনি আরও বলেন: “হে ঈমানদারেরা! তোমাদেরকে যেসব ভাল রিজিক দিয়েছি সেগুলো থেকে খাও।” [সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৭২] এরপর রাসূলুল্লাহ ﷺ উল্লেখ করেন যে, জনৈক ব্যক্তি লম্বা সফর করে উস্কখুস্ক চুল নিয়ে ধুলিমলিন অবস্থায় দুই হাত আকাশের দিকে তুলে দোয়া করে, ইয়া রব্ব, ইয়া রব্ব! অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম, সে পরিপুষ্ট হয়েছে হারাম খেয়ে তাহলে তার দোয়া কিভাবে কবুল হবে?”
ইবনে রজব রহ. বলেন, “হালাল খাওয়া, হালাল পান করা, হালাল পরিধান করা ও হালাল খেয়ে পরিপুষ্ট হওয়া দোয়া কবুল হওয়ার আবশ্যকীয় শর্ত।”
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
আরো পড়ুন– ☞ চাকুরির জন্য টাখনুর নীচে পোশাক পরিধানের শর্ত দিলে করণীয় কী? ☞ ঘুষ দিয়ে চাকরি নিলে, সেই চাকরির বেতন কি হালাল হবে? ☞ডেসটিনিসহ সকল মালটিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানিগুলোতে চাকুরি করা ☞ অমুসলিমের সাথে লেন-দেন করলে ইবাদতের কোনো ক্ষতি হয় কি? ☞ ব্যাংকের আইটিতে চাকরি করা কি হারাম? ☞ ব্যাংক বা সমিতিতে টাকা জমা রাখা বা চাকরি করা যাবে কি? ☞ ইন্টারনেট কোম্পানীতে চাকুরী করা যাবে কি?