রোজা কবুল হওয়ার আলামত

জিজ্ঞাসা–১৮০০: আমাদের রোজাগুলো কবুল হওয়ার কোনো আলামত আছে কি?–শহিদুল্লাহ।

জবাব:

১. ফুযাইল ইবন আয়ায রহ. বলেন,

إِنَّ الْعَمَلَ إِذَا كَانَ خَالِصًا وَلَمْ يَكُنْ صَوَابًا لَمْ يُقْبَلْ، وَإِذَا كَانَ صَوَابًا، وَلَمْ يَكُنْ خَالِصًا لَمْ يُقْبَلْ، حَتَّى يَكُونَ خَالِصًا صَوَابًا، وَالْخَالِصُ: مَا كَانَ لِلَّهِ، وَالصَّوَابُ: مَا كَانَ عَلَى السُّنَّةِ

যদি আমল খালেস হয় কিন্তু সঠিক না হয় তাহলে তা কবুল হয় না। অনুরূপভাবে যদি আমল সঠিক হয় কিন্তু খালেস না হয় তাহলেও তা কবুল হয় না। কবুল হয় কেবল তখনি–যখন আমল খালেস হবে, সঠিকও হবে। আর খালেস হওয়া দ্বারা উদ্দেশ্য, আমলটি আল্লাহর জন্য হওয়া এবং সঠিক হওয়া দ্বারা উদ্দেশ্য, আমলটি সুন্নাহ-মাফিক হওয়া। (মাদারিজুস সালেকীন ২/৯৩)

প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, সুতরাং আপনার রোজা যদি খালেস হয় এবং সঠিক হয় তাহলে আশা করা যায়, রোজা কবুল হওয়ার উপযুক্ত। হাদিসে এজাতীয় রোজার চিত্রায়ন এভাবে করা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

كُل عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ، الْحَسَنَةُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعمِائَة ضِعْفٍ، قَالَ اللهُ عَز وَجَل: إِلَّا الصَّوْمَ، فَإِنَّه لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ، يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ مِنْ أَجْلِي

মানুষের প্রত্যেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকীর সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতাশ গুণ পর্যন্ত। আল্লাহ তাআলা বলেন, কিন্তু রোজা আলাদা। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে। (সহীহ মুসলিম ১১৫১)

২. ইয়াহইয়া ইবন মুআয রহ. বলেন,

مَن استغفَر بلسانه وقلبُه على المعصية معقود، وعزمُه أن يرجع إلى المعصية ويعُود، فصومُه عليه مردود، وباب القبول في وجهه مسدود

যে ব্যক্তি জবানে ইসতেগফার করে অথচ তার অন্তর গুনাহর সঙ্গে আবদ্ধ। আর তার সংকল্প হল, সে আবার গুনাহর কাছে ফিরে আসবে তাহলে তার রোজা প্রত্যাখ্যাত এবং কবুলের দরজা তার সামনে রুদ্ধ। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা ২১৫)

প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, সুতরাং রোজা পালনের মাধ্যমে যদি আপনার অন্তরে গুনাহর প্রতি ঘৃণাবোধ ধীরে ধীরে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে, তাহলে আশা করা যায়, ওই রোজা কবুল হওয়ার উপযোগী।

রোজা সংক্রান্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা এটাই বলেছেন যে, لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ যাতে করে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। রাসুলুল্লাহ ﷺ-ও এটাই বুঝিয়েছেন। এজন্য তিনি বলেন,

لَيْسَ الصِّيَامُ مِنَ الأَكْلِ وَالشُّرْبِ ، إِنَّمَا الصِّيَامُ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ

পানাহার থেকে বিরত থাকার নাম রোজা নয়। আসলে রোজা হল, অসার ও অশ্লীল কথা ও কর্ম থেকে বিরত থাকার নাম। (সহিহ ইবনু খুযাইমা ১৯৯৬)

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন,

إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ

আল্লাহ তাকওয়াধারীদের পক্ষ থেকেই তো কবুল করেন। (সূরা মায়িদা ২৭)

والله أعلم بالصواب