হায়েয অবস্থায় গর্ভধারণ করলে সন্তান কি শয়তান-আশ্রিত হয়?

জিজ্ঞাসা–১৫৭৯: আমার স্ত্রীর পূর্বে ৫-৭ দিন হায়েজের অভ্যাস ছিল। সাম্প্রতিক শেষ ৩ মাস ১০ দিন হয়। সর্বশেষ মাসে ৭ দিন পর রক্ত না দেখে স্ত্রী ভেবেছিল পবিত্র হয়েছে এবং ৮ম দিন নামায শুরু করে। আর স্বামী সহবাসও করে। সকালে সামান্য রক্ত দেখে এবং এ অবস্থায় আরো ২দিন পার হয়। এরপরে আর হায়েজ হয়নি এবং সে আজকে ৫০ দিনের অন্তঃসত্ত্বা। এখন সে চাচ্ছে ওষুধের মাধ্যমে পিরিয়ড স্বাভাবিক করতে। কারণ হায়েজ অবস্থায় গর্ভধারণ করলে নাকি শয়তান আশ্রিত সন্তান হতে পারে। দ্রুত সমাধানের আশায় রইলাম।–নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।

জবাব: প্রশ্নোক্ত বিবরণ থেকে বুঝা যায় যে, আপনার স্ত্রীর অভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে। সুতরাং যেহেতু আপনি ভুলে মাসিক অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছেন তাই আপনার করণীয় হল, উক্ত ভুলের কারণে আল্লাহর কাছে তওবা ইস্তেগফার করা। আর যদি সম্ভব হয় তাহলে মুস্তাহাব হল, এক বা অর্ধ দিনার সদকা করে দেওয়া। এক দিনার বর্তমানে ৪.৩৭৪ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১৩৭ আলবাহরুর রায়েক ১/১৯৭)

আর হায়েজ অবস্থায় গর্ভধারণ করলে শয়তান-আশ্রিত সন্তান হতে পারে; এ জাতীয় কথাবার্তা কুসংস্কার বৈ কিছু নয়। ইসলামের সাথে এগুলোর কোন সম্পর্ক নাই। সুতরাং এ জাতীয় কুসংস্কারে বিশ্বাস রাখা হারাম। এমর্মে রাসূলুল্লাহ   উম্মতকে এই দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন যে,

اَللَّهُمَّ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُكَ وَلاَطَيْرَ إِلاَّ طَيْرُكَ وَلاَ إِلٰهَ غَيْرُكَ 

অর্থাৎ, হে আল্লাহ্! আপনার কল্যাণ ব্যতীত কোনকল্যাণ নেই এবং আপনার দেয়া শুভাশুভত্ব ব্যতীত কোন শুভ বা অশুভ নেই এবং আপনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। (আহমাদ ২/২২)

পাশাপাশি অনাগত সন্তানের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। এই দোয়াটিও অধিকহারে পড়তে পারেন।

رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের জীবনসঙ্গীর পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ দান করুন। (সূরা ফুরকান ৭৪)

والله أعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন