জিজ্ঞাসা–৬৫৩: ফরজ নামাজ ব্যতীত অন্য কোনো নফল নামাজ, বা তাহাজজুদ নামাজ স্ত্রীর সাথে জামাতে আদায় করা যাবে কি?—sajid
জবাব: তাহাজ্জুদ বা অন্যান্য নফল নামাজ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
فَعَلَيْكُمْ بِالصَّلاَةِ فِي بُيُوتِكُمْ، فَإِنَّ خَيْرَ صَلاَةِ المَرْءِ فِي بَيْتِهِ إِلَّا الصَّلاَةَ المَكْتُوبَةَ
সুতরাং তোমাদের উচিত যে, তোমরা ঘরেই নামাজ আদায় করবে। কারণ ফরজ ছাড়া অন্য নামাজ নিজ নিজ ঘরে পড়াই উত্তম। (বুখারী ৬১১৩ মুসলিম ৭৮১)
এজন্য ফকিহগণ বলেন, নফল নামাজ জামাতে পড়ার হুকুম হল- যদি মুক্তাদি দু’জন হয়, তাহলে তা জায়েয আছে। আর যদি তিনজন হয়, তাহলে এব্যাপারে ইমামদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। অনেকের মতে মুক্তাদি তিনজন হলেই সেই জামাত মাকরুহে তাহরিমি। কিন্তু মুক্তাদি যদি চারজন বা তার চেয়ে বেশি হয়, তাহলে সর্বসম্মতিক্রমে সেই জামাত মাকরুহে তাহরিমি তথা হারামের কাছাকাছি। যেমন,
ইমাম বদরুদ্দীন আইনী রহ. বলেন,
وصلاة النفل بالجماعة مكروهة ما خلا قيام رمضان وصلاة الكسوف لأنه لم يفعلها الصحابة، ولو فعلوا لاشتهرت، كذا ذكره الولوالجي
রমজানের কিয়ামুল লাইল ও সালাতুল কুসূফ ব্যতীত সকল নফল নামায জামাতে পড়া মাকরূহে তাহরীমী। কেননা এটা সাহাবায়ে কেরাম করেন নি। কেউ যদি তা করে থাকে তবে তা বিধি সম্মত হবে না। যেমন তা ওয়াল ওয়ালিজি নিজ কিতাবে বলেছেন। (আল বেনায়া শরহুল হেদায়া ২/৫৫৮)
ইমাম শামসুল আইয়িম্মাহ সারাখসী রহ. বলেন,
وَقَالَ فِي الْأَصْلِ : لَا يُصَلَّى التَّطَوُّعُ فِي الْجَمَاعَةِ مَا خَلَا قِيَامَ رَمَضَانَ
ইমাম মুহাম্মাদ আশ শাইবানী রহ. তার ‘আছল’ নামক কিতাবে বলেছেন, রমজানের কিয়ামুল লাইল ছাড়া অন্য কোন নফল নামায জামাতে পড়বে না। (মাবসূত ২/ ৩৭)
ইমাম শামসুল আইয়িম্মাহ হালওয়ানী রহ. বলেন,
إنْ كَانَ سِوَى الْإِمَامِ ثَلَاثَةٌ لَا يُكْرَهُ بِالِاتِّفَاقِ وَفِي الْأَرْبَعِ اخْتَلَفَ الْمَشَايِخُ وَالْأَصَحُّ أَنَّهُ يُكْرَهُ. هَكَذَا فِي الْخُلَاصَةِ.
ইমাম ছাড়া ৩ জন মুকতাদি হলে সকলের ঐক্যমতে মাকরূহ হবেনা আর ৪ জন হয়ে গেলে এখতেলাফ আছে, কিন্তু বিশুদ্ধ মতে মাকরূহ তাহরীমী হবে। যেমন তা খুলাছা কিতাবে আছে। (ফাতাওয়া আল হিন্দিয়্যাহ ১/৯২, বৈরত)
সুতরাং স্বামী-স্ত্রী এক সাথে নফল নামাজ জামাতে পড়তে পারবে। স্ত্রী স্বামীর একতিদা করলে তা সহীহ হবে। তবে স্ত্রী স্বামীর বরাবর হয়ে দাঁড়াবে না বরং একটু পিছনে দাঁড়াবে।
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী