জিজ্ঞাসা-৫০:মাননীয় মুফতি সাহেব দা:বা: ইমাম ও খতীব বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ। মুহাদ্দিস মাদরাসা দারুর রাশাদ মিরপুর ঢাকা।
প্রশ্ন:- আমার বড় ভাইয়ের ফ্লেক্সিলোডের দোকান। সেখানে বিকাশের লেনদেনও হয়। আমার জানার বিষয় হলো ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে বিকাশের লেন-দেন জায়েয কিনা?–আহমাদ ইবনে সুলতান।
জবাব: বিকাশের মাধ্যমে লেন-দেনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে, এক স্থান থেকে অন্যস্থানে টাকা প্রেরণ ও গ্রহণ। মোবাইল ব্যাংকিং-এর পরিভাষায় যাকে বলা হয় সেন্ড মানি ও ক্যাশ আউট। অর্থাৎ এটিকে ডাক বিভাগের মানিঅর্ডারের সহজ বিকল্প বলা যায়। সেবাটি পেতে হলে প্রথমে কোম্পানির(প্রতিনিধি)এজেন্টদের কাছে গিয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণের মাধ্যমে একটি একাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয়।(যদিও টাকা প্রেরণ ও গ্রহণের জন্য নিজস্ব একাউন্ট না থাকলেও চলে। সেক্ষেত্রে এজেন্টদের মাধ্যমে তা করা যায়।) আপনার ভাই যদি এজেন্ট হন এবং ফরম পূরণের কাজ করে থাকেন তাহলে মৌলিকভাবে এতে শরীয়া পরিপন্থী কোনো কিছু এখন পযন্ত নেই।
একজন মোবাইল একাউন্টধারী তার হিসাব থেকে অন্য একাউন্টধারীর হিসাবে নির্ধারিত পরিমাণে টাকা পাঠাতে পারে। এটিকে বলা হচ্ছে সেন্ড মানি। নির্ধারিত ফ্ল্যাট রেটে এই সুবিধা দেওয়া হয়। এতেও শরয়ী সমস্যা নেই।
ক্যাশ আউট। মোবাইল ব্যাংকিং-এর বহুল ব্যবহৃত সুবিধা এটি। নিজ একাউন্ট থেকে অথবা এজেন্টের কাছে প্রেরিত টাকা উত্তোলনই মোবাইল ব্যাংকিং-এর (বিকাশ,এমক্যাশ ইত্যাদি) মাধ্যমে সবচাইতে বেশি হয়ে থাকে।ফিকহে ইসলামীর দৃষ্টিতে এটি ‘আলইজারাহ’-এর অন্তর্ভুক্ত। الإجارة هي بيع منفعة معلومة بأجر معلوم ‘ইজারা হচ্ছে নির্ধারিত বিনিময়ে নির্ধারিত সেবা বিক্রয় করার নাম।(আরো দেখুন : আলআওসাত ১১/১৩১; আলমুগনী ৮/২২; আলফুরূক ৪/৩৪) এক্ষেত্রে টাকা জমা/উত্তোলনকারী হচ্ছে সেবাগ্রহীতা বা ‘মুসতাজির’। আর কোম্পানি হচ্ছে সেবাদাতা বা ‘আজীর’। এজেন্ট হচ্ছে মূল সেবাদাতা বা ‘আজীরে’র ওয়াকিল বা প্রতিনিধি। ওয়াকালাহ বা Agency Contract এর ক্ষেত্রে Agent বা প্রতিনিধি পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তার Agency এর দায়িত্ব পালন করতে পারে। আর পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে তা নির্দিষ্ট হওয়া জরুরী। তা নির্দিষ্ট অংক বা কোনো অংকের নির্দিষ্ট হার – উভয়টিই হতে পারে। যেমন ১০০ টাকায় ১০ টাকা, বা ১০০ টাকার ১০% – উভয়টিই বৈধ।
সুতরাং এখানে আপনার ভাই মূল সেবাদাতা-কোম্পানির প্রতিনিধি( Agent )হিসাবে নির্দিষ্ট হারে পারিশ্রমিক বা কমিশন নিতে পারে। এটা তার জন্য বৈধ হবে।
তবে এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সার্বিক বিবেচনায় বিকাশের মাধ্যমে টাকা টাকা প্রেরণ ও গ্রহণে যদিও কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু তা যেন সুদভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের সুদভিত্তিক কার্যক্রমে সহযোগিতার পর্যায়ে না হয়, তা লক্ষ্য রাখা উচিৎ।অতএব সেবাদাতা-কোম্পানি (যেমন,এখানে bkash) যদি সুদভিত্তিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের কাছে বেশি সময় টাকা গচ্ছিত রাখা উচিৎ নয়। কারণ এতে তারা গ্রাহকের টাকা কিছু সময়ের জন্য হলেও সুদভিত্তিক খাতে বিনিয়োগ করার সুযোগ পেয়ে যাবে।
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
বিকাশ সম্পূর্ণ রুপেই হারাম, কেননা এটা সম্পূর্ণরূপে সুদি ব্যাঙ্কের (ব্র্যাক ব্যাংক) পরিচালিত একটি অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান।
যেখানে আল্লাহ্ এবং আল্লাহ্র রাসুল(সাঃ) স্পষ্ট ভাবে সুদি কারবার শুধু করা নয় এতে জড়িত হওয়া থেকে খুবই কঠোর ভাবে নিষেধ করেছেন।
zajakallah
জাঝাকাল্লাহু শুকরান জাঝিলান।
জাঝাকাল্লাহু