দুশ্চিন্তা দূর করার ১০ আমল

দুশ্চিন্তা দূর করার ১০ আমল
দুশ্চিন্তা দূর করার ১০ আমল

দশের সমাহার পর্ব-১২

শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী

দুশ্চিন্তা, মানসিক অস্থিরতা আমাদের জীবনের এক অনাকাঙ্ক্ষিত অংশ। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব হতে পারে আবার রহমতও হতে পারে। শাইখুল ইসলাম তাকী উসমানী বলেন, যদি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হওয়ার পর তোমার গুনাহ বেড়ে যায়, আমল কমে যায় তাহলে এটা একথার আলামত যে, পেরেশানিটা তোমার ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব। পক্ষান্তরে যদি তোমার আমল বেড়ে যায়, গুনাহ কমে যায় তাহলে পেরেশানিটা হবে তোমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত। মূলত এর মধ্যমে তিনি তোমার মর্যাদা বাড়াবেন কিংবা গুনাহ মাফ করে দিবেন।

তাই এই পেরেশানি যেন আযাবের কারণ না হয়; বরং রহমতের উসিলা হয়; এ লক্ষে এটি দূর করার দশটি উপায় কোরআন-হাদীস থেকে বলে দিচ্ছি–

এক- তাকদিরের উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস রাখুন। কেননা, যে ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, সকল বিষয় লিপিবদ্ধ হয়ে গিয়েছে, আল্লাহ না চাইলে কেউ কারো কোন ক্ষতি করতে পারে না; সে ব্যক্তিকে দুঃশ্চিন্তা কাবু করতে পারে না। রাসূলুল্লাহ উম্মতকে এই শিক্ষাই দিয়েছেন। তিনি বলেন,

أَنَّ الْأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوكَ إِلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَكَ وَلَوْ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ يَضُرُّوكَ بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوكَ إِلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيْكَ رُفِعَتْ الْأَقْلَامُ وَجَفَّتْ الصُّحُفُ

জেনে রাখ, সমস্ত মানুষ যদি তোমার কোন উপকার করতে চায় তবে আল্লাহ্ তোমার জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, তা ব্যতীত আর কোন উপকার করতে পারবে না। আর যদি সমস্ত মানুষ তোমার কোন অনিষ্ট করতে চায় তবে আল্লাহ্ তোমার জন্য যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন তা ব্যতীত আর কোন অনিষ্ট করতে পারবে না। কলম তুলে নেয়া হয়েছে এবং পৃষ্ঠা শুকিয়ে গেছে। (তিরমিযি ২৫১৬)

অপর হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ বলেন,

وَاعْلَمْ أَنَّ مَا أَخْطَأَك لَمْ يَكُنْ لِيُصِيبَك، وَمَا أَصَابَك لَمْ يَكُنْ لِيُخْطِئَك، وَاعْلَمْ أَنَّ النَّصْرَ مَعَ الصَّبْرِ، وَأَنْ الْفَرَجَ مَعَ الْكَرْبِ، وَأَنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا

মনে রেখো, যা তুমি পেলে না, তা তোমার পাবার ছিল না, আর যা তুমি পেলে তা তুমি না পেয়ে থাকতে না। আরো জেনে রাখো, ধৈর্য্য ধারণের ফলে (আল্লাহর) সাহায্য লাভ করা যায়। কষ্টের পর স্বাচ্ছন্দ আসে। কঠিন অবস্থার পর স্বচ্ছলতা আসে। (ইমাম নববই-কৃত আলআরবাঈন-১৯)

দুই- চিন্তার মোড় ঘুরিয়ে দিন। দুনিয়ার মুসিবত নয়; বরং সবচে’ বড় মুসিবত তো হল আখেরাতের মুসিবত। সুতরাং চিন্তার ‘কেন্দ্রবিন্দু’ দুনিয়াকে না বানিয়ে আখেরাতকে বানান। এখন থেকে এভাবে চিন্তা করুন এবং এটাই যেন হয় মূল চিন্তা যে, আমি আখেরাতে আল্লাহর সামনে তাঁর সন্তুষ্টি নিয়ে দাঁড়াতে পারব তো! রাসূলুল্লাহ বলেন,

مَنْ جَعَلَ الْهُمُومَ هَمًّا وَاحِدًا هَمَّ آخِرَتِهِ كَفَاهُ اللَّهُ هَمَّ دُنْيَاهُ وَمَنْ تَشَعَّبَتْ بِهِ الْهُمُومُ فِي أَحْوَالِ الدُّنْيَا لَمْ يُبَالِ اللَّهُ فِي أَىِّ أَوْدِيَتِهَا هَلَكَ

যে ব্যাক্তি তার সমস্ত চিন্তাকে একই চিন্তায় অর্থাৎ আখিরাতের চিন্তায় কেন্দ্রীভূত করেছে, আল্লাহ তার দুনিয়ার চিন্তার জন্য যথেষ্ট। অপর দিকে যে ব্যাক্তি যাবতীয় পার্থিব চিন্তায় নিমগ্ন থাকবে সে যে কোন উন্মুক্ত মাঠে ধ্বংস হোক, তাতে আল্লাহ্‌র কিছু আসে যায় না। (ইবনু মাজাহ ২৫৭)

তিন আপনার থেকেও যার অবস্থা আরো করুণ ও বেগতিক; তার দিকে তাকিয়ে উপদেশ গ্রহণ করুন। ভাবুন, আল্লাহ আপনাকে তার থেকেও ভাল রেখেছেন। বর্তমান মনোবিজ্ঞানীরাও ডিপ্রেশনের চিকিৎসা হিসেবে রোগীকে এভাবে চিন্তা করার উপদেশ দিয়ে থাকেন। কেউ যদি ঋণগ্রস্থ হয়, বলা হয়, ‘তোমার চাইতে অবস্থা যার আরও খারাপ তার দিকে তাকাও। তুমি অসুস্থ; তোমার চেয়েও অসুস্থ আছে। তুমি অসহায়; তোমার চেয়েও অসহায় আছে।’ এভাবে চিন্তা করুন, দেখবেন, অস্থিরতা লাঘব হবে।

আমাদের নবীজীও দেড় হাজার বছর আগেই চিকিৎসার এ পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলেন। হাদিসে এসেছে, খাব্বাব ইবনু আরাত্ত্ রাযি. বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল -এর কাছে অভিযোগ করলাম এমতাবস্থায় যে, তিনি কা‘বা ঘরের ছায়ায় একটি চাদরে ঠেস দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম যে, ‘আপনি কি আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবেন না? আপনি কি আমাদের জন্য দো‘আ করবেন না?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘তোমাদের জানা উচিত যে, তোমাদের পূর্বেকার মু’মিন লোকেদের এই অবস্থা ছিল যে, একটি মানুষকে ধরে আনা হত, তার জন্য গর্ত খুঁড়ে তাকে তার মধ্যে পুঁতে রাখা হত। অতঃপর তার মাথার উপর করাত চালিয়ে তাকে দু’খণ্ড করে দেওয়া হত এবং দেহের গোশতের নিচে হাড় পর্যন্ত লোহার চিরুনী চালিয়ে শাস্তি দেওয়া হত। কিন্তু এই কঠোর পরীক্ষা তাকে তার দ্বীন থেকে ফেরাতে পারত না। (বুখারী ৩৬১৬)

চার- আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন এবং তাঁর প্রতি এ সুধারণা রাখুন যে, তিনি আপনাকে আপনার দুরাবস্থা থেকে নাজাত দিবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ‘আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।’ (তালাক ৩)

রাসূলুল্লাহ বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করেন,أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي আমি সেইরূপই, যেরূপ বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। (বুখারী ৬৯০১)

পাঁচ- ধৈর্য্যধারণ করুন। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

وَاعْلَمْ أَنَّ النَّصْرَ مَعَ الصَّبْرِ، وَأَنْ الْفَرَجَ مَعَ الْكَرْبِ، وَأَنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا

জেনে রাখো- ধৈর্য্য ধারণের ফলে (আল্লাহর) সাহায্য লাভ করা যায়। কষ্টের পর স্বাচ্ছন্দ আসে। কঠিন অবস্থার পর স্বচ্ছলতা আসে। (ইমাম নববই-কৃত আলআরবাঈন-১৯)

ছয়- সালাতুল হাজাত পড়ুন। হাদিসে এসেছে, كَانَ رَسُولُ اللَّهِ  إِذَا حَزَبَهُ أَمْرٌ فَزِعَ إِلَى الصَّلاةِ রাসূলুল্লাহ যখন দুঃশ্চিন্তায় পড়তেন, নামাযে মগ্ন হতেন। (জামিউল বায়ান ৭৭৯) আল্লাহ তাআলা বলেন,  وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاةِ তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। (সূরা বাকারা ৪৫)

সালাতুল হাজাতের নিয়ম জানতে জিজ্ঞাসা নং ২৯৩ পড়ুন।

সাত- অধিকহারে ইস্তেগফার করুন। রাসূলুল্লাহ বলেছেন,

مَنْ لَزِمَ الاِسْتِغْفَارَ جَعَلَ اللَّهُ لَهُ مِنْ كُلِّ ضِيقٍ مَخْرَجًا وَمِنْ كُلِّ هَمٍّ فَرَجًا وَرَزَقَهُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَحْتَسِب

যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুঃশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের সংস্থান করে দেবেন। (আবূদাউদ ১৫২০)
আট- অধিকহারে দরূদ পড়ুন। হাদিসে এসেছে, উবাই ইবন কা’ব রাযি. বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি আপনার উপর অধিক হারে দরূদ পাঠ করে থাকি। আমার সময়ের কতটুকু আপনার প্রতি দরূদ পাঠে ব্যয় করব?  রাসূলুল্লাহ বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ সময়? তিনি বললেন, তোমার ইচ্ছা। কিন্তু যদি আরো বাড়াও তবে ভাল। আমি বললাম, অর্ধেক সময়? তিনি বললেন, তোমার যা ইচ্ছা; তবে আরো বৃদ্ধি করলে তা-ও ভাল। আমি বললাম, দুই তৃতীয়াংশ সময়? তিনি বললেন, তোমার ইচ্ছা; তবে আরো বাড়ালে তাও ভাল। আমি বললাম, আমার সবটুকু সময় আপনার উপর দরূদ পাঠে লাগাব? তিনি বললেন, إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ তাহলে তো তোমার চিন্তামুক্তির জন্য তা যথেষ্ট হয়ে যাবে আর তোমার গুনাহ মাফ করা হবে। (তিরমিযি ২৪৫৭)
নয়- যে বিষয় নিয়ে আপনার দুঃশ্চিন্তা; সে বিষয়ে কোন আমলধারী নির্ভরযোগ্য ভাল আলেমের সঙ্গে পরামর্শ করুন। যেমন উপরে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, খাব্বাব ইবনু আরাত্ত্ রাযি. বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল -এর কাছে অভিযোগ করলাম…। তাবরানির (৬৬২৭) এক বর্ণনায় এসেছে, ما خاب مَن استشارযে ব্যক্তি পরামর্শ কামনা করে সে অকৃতকার্য  হয় না।
দশ- দুঃশ্চিন্তা ও মানসিক অস্থিরতা থেকে নাজাতের উদ্দেশ্যে হাদিসে বেশ কিছু দোয়া শিক্ষা দেয়া হয়েছে। ওই দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়ুন। যেমন,
১। আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, নবী রাসূলুল্লাহ বলেছেন, যদি কেউ কখনো দুঃশ্চিন্তা বা বেদনায় আক্রান্ত হয়ে এভাবে বলে,

اللَّهُمَّ إِنِّي عَبْدُكَ ، وَابْنُ عَبْدِكَ ، وَابْنُ أَمَتِكَ ، نَاصِيَتِي بِيَدِكَ ، مَاضٍ فِيَّ حُكْمُكَ ، عَدْلٌ فِيَّ قَضَاؤُكَ ، أَسْأَلُكَ بِكُلِّ اسْمٍ هُوَ لَكَ سَمَّيْتَ بِهِ نَفْسَكَ ، أَوْ عَلَّمْتَهُ أَحَدًا مِنْ خَلْقِكَ ، أَوْ أَنْزَلْتَهُ فِي كِتَابِكَ ، أَوْ اسْتَأْثَرْتَ بِهِ فِي عِلْمِ الْغَيْبِ عِنْدَكَ ، أَنْ تَجْعَلَ الْقُرْآنَ رَبِيعَ قَلْبِي ، وَنُورَ صَدْرِي ، وَجِلاءَ حُزْنِي ، وَذَهَابَ هَمِّي 

(অর্থ- হে আল্লাহ! আমি আপনার বান্দা, আপনার বান্দা ও বান্দীর সন্তান। আমার নসীব আপনার হাতে। আমার উপর আপনার নির্দেশ কার্যকর, আমার প্রতি আপনার ফয়সালা ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমি সেই সমস্ত নামের প্রত্যেকটির বদৌলতে আপনার নিকট কাতর প্রার্থনা জানাই— যে নামগুলো আপনি নিজেই নিজের জন্য নির্ধারণ করেছেন অথবা নিজ কিতাবে নাযিল করেছেন অথবা আপনার সৃষ্টিজীবের মধ্যে কাউকে শিখিয়ে দিয়েছেন অথবা স্বীয় ইলমের ভাণ্ডারে নিজের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছেন— কুরআনকে আমার হৃদয়ের প্রশান্তি বানিয়ে দিন, আমার বক্ষের জ্যোতি বানিয়ে দিন, আমার দুঃশ্চিন্তাগুলোর অপসারণকারী বানিয়ে দিন এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিদূরণকারী বানিয়ে দিন।)

তাহলে আল্লাহ তার দুঃশ্চিন্তা দূর করে দিবেন, বেদনা অপসারণ করে দিবেন। এর বদলে প্রশান্তি আনয়ন করে দিবেন। জিজ্ঞেস করা হল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমরা কি দোয়াটি শিখে নিব না? তিনি বললেন: অবশ্যই। যে ব্যক্তি দোয়াটি শুনেছে তার উচিত এটি শিখে নেয়া। (মুসনাদে আহমদ  ৩৫২৮)

২। ইমাম আবু দাউদ ‘সুনান’ গ্রন্থে (৫০৯০) ও ইমাম আহমাদ ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে (২৭৮৯৮) আবু বাকরা রাযি. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ  বলেন, “বিপদগ্রস্তের দোয়া হচ্ছে,

اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو ، فَلَا تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ ، وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ

(অর্থ- হে আল্লাহ! আমি আপনার দয়া প্রত্যাশা করছি। সুতরাং চোখের পাতা ফেলার মত সময়ের জন্যেও আপনি আমাকে আমার নিজের ওপর ছেড়ে দিবেন না। আমার যাবতীয় বিষয় আপনি ঠিক করে দিন। আপনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই।)

৩। রাসূলুল্লাহ বলেন, আমি এমন একটি দোয়া সম্পর্কে অবগত আছি, কোন বিপদগ্রস্ত লোক তা পাঠ করলে আল্লাহ্ তা‘আলা তার সেই বিপদ দূর করে দিবেন। সেটি হচ্ছে আমার ভাই ইউনুস আ-এর এর দু’আ। দোয়াটি এই,

لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

(অর্থ-হে আল্লাহ! তুমি ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই; আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিঃসন্দেহে আমি জালেমদের অন্তর্ভুক্ত।) (তিরমিযী ৩৫০৫)

৪। আবু সাঈদ খুদরী রাযি. হতে এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ আবু উমামা রাযি. কে বলেছেন- আমি কি তোমাকে এমন একটি বাক্য শিক্ষা দিব না, তুমি যদি তা পাঠ কর, তাহলে আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার দুশ্চিন্তা দূর করে দিবেন এবং তোমার ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করে দিবেন? বর্ণনাকারী বলেন- আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে তা শিক্ষা দিন। তিনি বললেন,  সকাল ও বিকালে তুমি পাঠ করবে-

اللّٰهُمَّ  إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وأعوذبك من َالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَأعوذبك من الْجُبْنِ الْبُخْلِ وَغلبة الدَّيْنِ وَ قَهْرِ الرِّجَالِ

(অর্থ-হে আল্লাহ! আমি উদ্বিগ্ন ও বিষণ্ণ হওয়া থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে অক্ষম ও আলস্য হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তোমার কাছে আরও আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা করা ও ভীরু হওয়া থেকে। হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে ঋণের আধিক্য এবং পুরুষদের অন্যায় প্রাধান্য ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।)

আবু উমামা রাযি. বলেন, আমি এই দু’আটি পাঠ করলাম। এতে আল্লাহ্ তা‘আলা আমার যাবতীয় দুশ্চিন্তা দূর করে দিলেন এবং ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিলেন।