হেদায়াতের ছয় আলামত : সা’দপন্থীদের গোমরাহ বলা উম্মতের উপর ওয়াজিব কেন? (পর্ব-২)

ওলামায়ে কেরামের ঐক্য তিন হযরতজীর তরীকা সঠিক

আরেকটি কথা গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করে রাখি, যেমনিভাবে আলেম-ওলামা একমত হয়েছেই মাওলানা সা’দ তাবলীগ থেকে বের হয়ে গেছেন। ঠিক তেমনিভাবে আলেম-ওলামা এই কথার উপরে একমত হয়েছেন যে, দাওয়াত ও তাবলীগ হল হক জামাত।

হযরতজী মাওলানা ইলিয়াস রহমাতুল্লাহি আলাইহি  তাবলীগের যেই রূপ আমাকে আপনাকে দিয়ে গেছেন, আলেম-ওলামারা একমত হয়ে বলেছেন, এরূপের সাথে কোরআন সুন্নাহর সম্পর্ক আছে।
হযরতজী মাওলানা ইউসুফ সাহেব যেটা রেখে গেছেন। ওলামা কেরাম বলেছেন, এর সাথেও কোরআন সুন্নাহর সম্পর্ক আছে।
হযরতজী এনামুল হাসান রাহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি যে নমুনা পেশ করেছেন। তার সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, এর সাথে কোরআন সুন্নাহর সম্পর্ক আছে।

তাবলীগ বিদ্বেষীরা গোমরাহ
সুতরাং যারা আগে থেকেই দাওয়াত ও তাবলীগ দেখতে পারে না, বলুন তো তারা কি হেদায়াতের উপর আছে? না। কেন? তারা কেন হেদায়াতের উপর নাই? যে মূলনীতির ভিত্তিতে মাওলানা সা’দকে আজকে গোমরাহ বলতে হয়। ওই মূলনীতির ভিত্তিতেই আজকে যারা দাওয়াত ও তাবলীগ দেখতে পারে না, তারা হেদায়েতের উপর নাই। মূলনীতি ভিন্ন নয়, মূলনীতি একই।

মারামারি নয় মারা হয়েছে
এই সা’দপন্থীদের গোমরাহ হয়ে যাওয়ার একটা নিদর্শন আমরা পেলাম। গত শনিবারে ০১/১২/১৮ টঙ্গী ইজতেমার ময়দানে। এর বড় একটা প্রমাণ দেখলাম গত শনিবারের ০১/১২/০১৮ একটা দুর্ঘটনায়।
গত পরশু ০৬/১২/১৮ বৃহস্পতিবার আমি এক জায়গায় মাহফিলে যাওয়ার পর এক যুবক আমাকে জিজ্ঞাসা করল, হুজুর সেদিন যে মারামারি হলো, আমরা কার পক্ষে যাব? আমি বললাম্‌ সেখানে মারামারি তো হয় নাই; বরং মারা হয়েছে। বলেন তো মারামারি হয়েছে নাকি মারা হয়েছে? মারা হয়েছে। সেখানে মারামারি হয় নাই। আপনাদের চোখের সামনে অনেক ঘটনা আছে। আমরাও দেখেছি আমরাও শুনেছি অনেক ঘটনা। এখন ইন্টারনেটের উছিলায় অনেক ঘটনা আমরা সকলেই জানি।

তালেবে ইলমের প্রতি ওমরের রাযি.-এর বিনয়তা
ছোট ছোট তালিবে ইলমগুলো, আহ! এই তালেবে ইলমগুলো কারা? হযরত ওমর রা., যার সম্পর্কে নবীজি আলাইহিস সালাম বলেছেন- لوكان بعدي نبيا لكان عمر [আমার পরে যদি কোন নবী আসত (আসবে না) যদি আসতো, যদি হতো তার নাম হতো- ওমর।] এমন মহান ব্যক্তি অর্ধ পৃথিবীর শাসক যিনি ছিলেন, কী পরিমাণ ব্যস্ততা তার। এমন মহান ব্যক্তি পর্যন্ত তার রাষ্ট্রীয় ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে মদিনার মসজিদে নববীতে কোরআন শিখতো যেসব তালিবে ইলম। তিনি তাদের কাছে যেতেন আর তাদের কাছে গিয়ে বলতেন- তোমাদের চাচা ওমর এর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া কর! ছোট ছোট এই তালেবে ইলমরা বলতো- কী দোয়া করব? তখন ওমর রাযি. শিখিয়ে দিতেন- তোমরা আল্লাহর কাছে দোয়া কর- ‘ওগো আল্লাহ আপনি আমাদেরকে মাফ করে দিন!’

তাহলে ইলমদের প্রতি আবু হুরায়রা রাযি.-এর শ্রদ্ধা
হযরত আবু হুরায়রা রাযি.-এর এক অভ্যাস ছিল- সাহাবায়ে কেরামদের অভ্যাস ছিল কোরআন শিক্ষারত ছোট ছোট বাচ্চা তালিবে ইলমদের কাছে যেতেন এবং দোয়া চাইতেন। কী বলে দোয়া চাইতেন? যে  তোমরা বল- তিনি যেন তোমাদের চাচা আবু হুরায়রাকে ক্ষমা করে দেন।
اللهم اغفر لابي هريرة [ওগো আল্লাহ আপনি আবু হুরায়রা কে মাফ করে দেন।]

শনিবারের ঘটনা
এই ছোট ছোট বাচ্চা তালিবে ইলমগুলো ঐদিন সূরা ইয়াসিন একলক্ষ বার পড়ার আমলে লিপ্ত ছিল। ৭০ হাজার বার পড়া শেষ হয়ে গেছে আর ৩০ হাজার বার বাকি ছিল। সেখানে ওই ইজতেমার ময়দানে হযরত মাওলানা জুবায়ের সাহেব -এর ছদারাতে যে মাদ্রাসা চলে সেই মাদ্রাসার ছোট ছোট তালেবে ইলেমরাও ছিল। তাদের গায়ে হাত তুলেছে। তাদেরকে রক্তাক্ত করেছে। এক একটা মাদ্রাসার শত শত তালিবে ইলম। কেউ তাদের হাত হারিয়েছে। কেউ চোখ হারিয়েছে। কেউ বা পা হারিয়েছে। ইজতেমার ময়দানে খুঁজে খুঁজে আলেম-ওলামাদের গায়ে হাত তুলেছে। যারা আলেম ওলামার গায়ে হাত তুলেছে পথভ্রষ্ট সন্ত্রাসী ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।

এই জাতীয় কথা শুনলে অনেকেই বলেন- হুজুর আমাদেরকে এগুলোর সাথে মিলাবেন না। আমরা এলাকার বিচারক মানুষ। আমরা রাজনীতি করি। আমরা ব্যবসায়ী। আমরা এই করি। আমরা সেই করি। আমরা দু’পক্ষের সঙ্গে আছি।

দ্বি মুখী হওয়া থেকে সাবধান
মনে রাখবেন দুই পক্ষে থাকার কোনো সুযোগ নেই। সুযোগ নেই তার প্রমাণ কী? তার প্রমাণ হলো- কোরআন। আয়াতে আল্লাহ বলেন-

وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ

অর্থাৎ কিছু লোক যখন জাহান্নামে যাবে জাহান্নামে যাওয়ার পরে তখন ওই লোকগুলোকে আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন- জাহান্নামে কেন আসলে? তারা যে উত্তর দিবে তারা যে তথ্য পেশ করবে আল্লাহতালা সেই তথ্যকে সত্যায়ন করে আকাশ থেকে ওহী নাযিল করেছেন। আল্লাহ বলেন- তারা যেই কথাগুলো বলবে সেই কথাগুলো ঠিক আছে। এই মর্মে আল্লাহ নাযিল করেন যে তারা বলবে মূল বিষয় হলো এই যে, আমরা আলেম ওলামার কথা শুনতাম না যদি আমরা আলেম ওলামার কথা শুনতাম তাহলে আজকে আমরা জাহান্নামী হতাম না। আর আরেকদল বলবে- আমরা আলেম হই নাই। যদি আমরা আলেম হয়ে যেতাম তাহলে আজকে আমরা জাহান্নামী হতাম না।

মুফাসসিরীনে কেরাম লিখেন- আমরা আলেম ওলামার কথা শুনতাম না। এই কথা কেন আল্লাহ আগে বললেন? আলেম-ওলামা হয়ে যায় নাই। যদি হয়ে যেতাম তাহলে জাহান্নামী হতাম না। এ কথা কেন পরে বললেন?

উম্মতের আলেম হবে কম তাদের অনুসারী হবে বেশি
এর কারণ হিসেবে মুফাসসিরীনে কেরামে লিখেন- মূলত আলেম-ওলামার অনুসারীদের সংখ্যা থাকবে বেশি আর আলেম ওলামার সংখ্যা থাকবে কম। কারণ আল্লাহ তাআলা সকলকে আলেম-ওলামা হওয়ার দায়িত্ব দেননি; বরং আল্লাহ বলেছেন-

فَلَوْلَا نَفَرَ مِنْ كُلِّ فِرْقَةٍ مِنْهُمْ طَائِفَةٌ لِيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ

প্রত্যেক বড় জামাত থেকে ছোট একটা জামাত বের হবে ইলম শিক্ষার জন্য। তারপর তারা যখন ইলম শিখে আসবে। উম্মতকে তখন হেদায়াতের কথা শুনাবে। জান্নাতের সুসংবাদ দিবে। জাহান্নাম সম্পর্কে ভয় দেখাবে। আর এই বড় জামাত তথা সকলের জন্য তখন ওয়াজিব হয়ে যাবে এই ছোট জামাত (যারা ইলেম শিখে এসেছে) তাদের কথা শোনা।
এখান থেকে বুঝা গেল আলেম-ওলামার সংখ্যা বেশি হবে নাকি আলেম-ওলামার অনুসারীদের সংখ্যা হবে? আলেম ওলামার অনুসারীদের সংখ্যা বেশি হবে। এই লোকগুলো বলবে- ওগো আল্লাহ! যদি আমরা আলেম ওলামার অনুসারী হয়ে যেতাম। অথবা আলেম-ওলামা হয়ে যেতাম তাহলে আজকে জাহান্নামী হতাম না।

এই আয়াত থেকে বুঝা গেল- যারা বলে আমরা কোন পক্ষে নাই। আমরা কোন দলে নাই। আমরা সবার সাথে আছি। এই দলের সাথে আছি। ওই দলের সাথে আছি। আল্লাহর দপ্তরে তার নাম মুনাফিকের তালিকায় থাকবে বিধায় সেও গোমরাহ-পথভ্রষ্ট ছাড়া আর কিছু নয়। কোনো দলে নাই এ কথা বলার সুযোগ নেই। যেমনিভাবে দাওয়াত ও তাবলীগ জামাতকে না-হক বলার সুযোগ নাই আলেম-ওলামা একমত হওয়ার কারণে। অনুরূপভাবে মাওলানা সাদ পন্থীদের হক বলার সুযোগ নেই আলেম-ওলামা একমত হয়ে যাওয়ার কারণে। ঠিক তেমনিভাবে আমরা কোনো দলে নাই এ কথা বলার কোনো সুযোগ নেই হককে চিনে তার অনুসরণ করা ওয়াজিব হওয়ার কারণে। সুতরাং বলুন, আমরা দুই দলের কোনো দলে নাই এ কথা বলার সুযোগ আছে?  না।
دین زندھ ھوتاھے ھر قربانی کے بعد
এই ছোট ছোট তালেবে এলেমদের গায়ে হাত তুলেছে। আলেম ওলামার গায়ে হাত তুলেছে তাদের রক্ত ঝরিয়েছে; তবে একটা সুসংবাদ আছে। আল্লাহ তাআলা তার দীনের জন্য মাঝে মধ্যে রক্ত চান কেন? কেন চান? জানেন যাতে দীন পুনরায় আবার জীবিত হয়। কারণ মানুষ যখন অনেকদিন সুখে থাকে নিরাপত্তার ভিতরে থাকে তখন যে দীনর জন্য রক্ত দরকার এটা মানুষ ভুলে যায়। যখন মানুষ ভুলে যায় তখন আল্লাহ তাআলা দীনের জন্য কিছু রক্ত নেন। যেমনিভাবে একটা আধা মরা গাছকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তার গোড়ায় পানি ঢালতে হয়। ঠিক তেমনিভাবে আমাদের থেকে যখন দীনদারী মুছে যেতে থাকে, চলে যেতে থাকে। তখন এই দীনদারীকে উজ্জীবিত করার জন্য উম্মতের রক্তের প্রয়োজন হয়। এজন্য আল্লাহ তাআলা মাঝে মাঝে রক্ত নেন।

জাপানের ঘটনা
গত পরশু ০৫/১২/১৮ জাপানের এক কারগুজারী শুনছিলাম । এক আলেম বলছেন- যিনি জাপান সফর করে এসেছেন সবে মাত্র দু এক দিন হয়েছে। তিনি বলেন- (যে দিন বলেছেন ওই দিনই তিনি সফর করে এসেছেন) তিনি আমাদের শোনাচ্ছিলেন দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ পুরা জাপান ব্যাপী চলছিল। যখন দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ চলছিল তখন এই মাওলানা সাদ এর সাথে ওলামায়ে কেরামের এই মতপার্থক্য শুরু হয়। তখন জাপানের তাবলীগের সাথীরা (মাশোয়ারা) পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, আমরা আপাতত পর্যবেক্ষণ করব, দেখতে থাকব ঘটনা কোন দিকে গড়ায়? যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কাছে পরিষ্কার হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত চুপ থাকব। আমরা মাওলানা সাদের মারকাজ নিজামুদ্দিন থেকে কোন জামাত আসলে তাদের গ্রহণ করবো আর ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে অন্য কোনো জামাত কোনো দেশ থেকে আসলে তাদেরকেও গ্রহণ করব। তাদেরকে আমরা দেখতে থাকি।
এরপর যখন শনিবারে ০১/১২/১৮ এ ঘটনা ঘটল। এই ঘটনা ঘটার পর তার পরের দিন তথা রবিবারে ০২/১২/১৮ জাপান তাবলীগের সমস্ত পুরনো সাথী এবং আলেম-ওলামাদের নিয়ে মিটিং (মাশোয়ারা) ছিল। এরপর ওই মাশোয়ারা হতে সিদ্ধান্ত হয় যে, যারা আলেম ওলামার গায়ে হাত তুলতে পারে তারা কখনো উম্মতের জন্য উপকারী হতে পারে না। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেন যে, আলেম-ওলামা যা বলবে আমরা তাই শুনবো আল্লাহর বান্দারা আপনারা দেখেছেন- শত শত তালেবে এলেম, শত শত আলেম ওলামা টঙ্গির ময়দানে রক্ত ঝরিয়েছেন। মূলত আল্লাহ বদরের (যুদ্ধের) পর ইসলামকে উজ্জীবিত করেছেন। গোটা বিশ্বব্যাপী ইসলামের পতাকা উড্ডীন করেছিলেন। আল্লাহর রহমতের উপর আশা রেখে আমরা আল্লাহর কসম করে এ কথাও বলতে পারি- খোদার কসম! আলেম ওলামার এ রক্তের বিনিময়ে দাওয়াত ও তাবলীগ আবার পুনরায় সারা বিশ্বে তার পতাকা উড্ডীন করবে ইনশাআল্লাহ।

ফেৎনাবাজদের অবসান সুনিশ্চিত
আর যারা উম্মতের মধ্যে ফিতনা ছড়ায়। যেমনিভাবে কাদিয়ানীরা এই উম্মতের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টি করে টিকে থাকতে পারে নাই। যেমনিভাবে মাওলানা মওদূদী ফিৎনা সৃষ্টি করে টিকে থাকতে পারে নাই। যেমনিভাবে ডাক্তার স্কলাররা উম্মতের মধ্যে ফিৎনা সৃষ্টি করে টিকে থাকতে পারে নাই। তেমনিভাবে মাওলানা সাদ ও ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। উম্মতের মধ্যে যে ফিতনা সৃষ্টি করে তার কোনো অবস্থান উম্মতের মধ্যে হবে না।

সাদপন্থী আলেমরা সর্বনিকৃষ্ট আলেম
তারা একটা কথা বলে থাকে বলে থাকে যে, আমাদের সাথে তো আলেম-ওলামা আছে। বলে এ কথা? আমাদের সাথেও আলেম ওলামা আছে? বলে! এবার দেখেন এই কথাটার জবাব আমরা হাদিসে কী পাই!

قال رسول الله ﷺ ان من أشراط الساعة أن يلتمس الناس العلم من الاصاغر

রাসূল ﷺ বলেন- নিশ্চয় কেয়ামতের আলামত হলো যে, লোকজন তাদের ছোটদের (নিকৃষ্টদের) থেকে এলম তালাশ করবে। এই হাদীসের ব্যাখ্যায় আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিআল্লাহু আনহু বলেন-

واذاالتمسوامن أصاغرهم واشرارهم هلكوا

লোকজন যখন তাদের হীন ও দুষ্ট লোকদের থেকে ইলম তালাশ করবে, তখন তারা ধ্বংস হবে।

এই কথার অর্থ কী? এই কথার অর্থ হল- ওলামায়ে কেরামের বাজারে যাদের মূল্য নাই। কেয়ামতের একটা আলামত হলো- কিছু মানুষ তাদেরকে আলেম বানিয়ে তাদের কাছ থেকে ইলম গ্রহণ করবে।

ওলামায়ে কেরামের বাজারে যাদের মূল্য নাই কেয়ামতের আগে কিছু মানুষ তাদেরকে আলেম বানিয়ে তাদের কাছ থেকে ইলম গ্রহণ করবে।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন- যখন মানুষ এই সমস্ত লোক যাদের নাম-দাম ওলামায়েকরামের বাজারে নাই, ওলামায়ে কেরামের সমাজে যাদের কোন মূল্য নাই, ওলামায়ে কেরামের সমাজ যাদেরকে চিনে না, যাদেরকে জানে না, তাদের থেকে যখন মানুষ এলেম গ্রহণ করা শুরু করবে তখন যার থেকে এলেম গ্রহণ করবে সে হলো উম্মতের মধ্যে সবচেয়ে দুষ্ট সবচেয়ে ফিতনাবাজ। আর এই ফিতনাবাজ থেকে এলেম গ্রহণ করার কারণে এই দুষ্ট লোকটা থেকে এলেম গ্রহণ করার কারণে। যারা করবে তারা ধংস হয়ে যাবে! তারা ধ্বংস হয়ে যাবে!!
এখান থেকে বুঝা যায়, তারা যে বলে- আমাদের সাথে আলেম-ওলামা আছে। আপনারা ভালো করেই জানেন- তাদের সাথে যে সমস্ত আলেম-ওলামা আছে ঐ সমস্ত আলেম ওলামার মূল্য বাজারে আগেও ছিল না এখনো নাই। আলেম ওলামার সমাজে তাদের নাম ছিল না। কে এই তথাকথিত আশরাফ আলী? কে এই ওয়াসিফ গং? এগুলোতো কোন আলেম নয়। আর কে এই তথাকথিত নাসিম? এগুলোতো কোন আলেম নয়। আলেম নামে জাহেল মূর্খ।
আর কথিত ওলামায়ে কেরামের সমাজে যাদের নাম নাই যাদের নাম শোনা যায় না, তাদের থেকে যদি তোমরা এলেম গ্রহণ করো তাহলে ওয়াসিফ গং-রা হলো সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী! বড় ফেতনাবাজ !! বলেছেন নবীজির সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু। আর তাদের অনুসারীরা যারা, তারা ধ্বংস হয়ে যাবে! ধ্বংস হয়ে যাবে!! ধ্বংস হয়ে যাবে!!!

ইমাম আহমদ ইবনে রহমাতুল্লাহি আলাইহি-এর উক্তি
এক্ষেত্রে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি চমৎকার বলেছেন-ان لحوم العلماء مسمومة মনে রাখবে- যারা ওলামায়ে কেরামের গীবত কর, ওলামায়ে কেরামের গোস্ত বিষ বিষ বিষ। তিনি বলেন-فمن أكل فعذاب الله عليه معلوم যে ব্যক্তি ওলামায়ে কেরামের গোস্ত খাবে ওলামায়ে কেরামের গীবত করবে; তাহলে তার উপর আল্লাহর আযাব আসবেই এই কথা স্বতঃসিদ্ধ।

যেমনভাবে আসমান আছে এই কথা স্বতঃসিদ্ধ। যেমনিভাবে জমিন আছে এই কথা স্বতঃসিদ্ধ। যেমনিভাবে বাতাস আছে এই কথা স্বতঃসিদ্ধ। ঠিক তেমনিভাবে আলেম ওলামারা গীবত যারা করবে তাদের উপর আল্লাহর আযাব আসবেই; এ কথাও স্বতঃসিদ্ধ।

ইবনে আসাকির রহমতুল্লাহি আলাইহি এর উক্তি
এই মর্মে ইবনে আসাকির রহ. বলেন- তিনি একজন হাফেযে হাদীস ছিলেন। তিনি বলেন- শুনে রাখ জেনে রাখ!ومن أطلق لسانه في العلماء ابتلا له الله قبل موته في كلب الموتযে ব্যক্তি তার জবানকে দরাজ-লম্বা করবে, আলেম ওলামার গীবত করার ব্যাপারে যে ব্যক্তি জবান দরাজ লম্বা করবে আলেম ওলামার সমালোচনা করার ব্যাপারে। মওতের আগে আল্লাহ তাআলা তাকে বেঈমান করে ছাড়বেন। নাউযুবিল্লাহ।
এ জন্য ফতোয়ার কিতাব খুলে দেখুন! যে কোন ফতোয়ার কিতাব খুলে দেখুন!! ফতোয়ায়ে শামীসহ যে কোনো ফতুয়ার কিতাব খুলে দেখুন!!! আলেম-উলামার কিংবা আলেম হওয়ার কারণে যদি কেউ সমালোচনা করে সেখানে লেখা আছে-كاد أن يكفر সে ব্যক্তি বেইমান হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

যে ব্যক্তি আলেম ওলামার সমালোচনা করে তার পরিণতি যদি এমন হয়, যে লোকটা আলেম ওলামার রক্ত ঝরালো সেই লোকটার অবস্থা কেমন হবে! আল্লাহর রহমত এর উপর, আল্লাহর বিচার এর উপর আশা রেখে আমরা এ কথা বলি- যে লোকটা আলেম ওলামার রক্ত ঝরায় সেই লোকটা বেঈমান হয়ে মরবে। নাউজুবিল্লাহ। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তৌফিক দান করুন।

আল্লামা নিজামুদ্দিন শামযী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মূল্যবান উক্তি
হযরত মাওলানা নিজাম উদ্দিন শামযী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর একটি কথা মনে পড়ল। কথাটা বলেই আমি আমার সামনের আলোচনায় চলে যাব। আল্লামা নিজামুদ্দিন শামযী অনেক বড় আলেম ছিলেন। এই আল্লামা বলেন- এই মহা মণীষী বলেন- এ গোটা দুনিয়াতে ইহুদি খ্রিস্টানরা যতগুলো চক্রান্ত করে, অতীতে করেছে, বর্তমানে করছ, ভবিষ্যতেও করবে। তিনি বলেন- সবগুলো চক্রান্তের ফিরিস্তি তৈরি করে, সবগুলো চক্রান্তের উপর বিস্তারিত আলোচনা করে যদি কয়েক ভলিউমে কয়েক হাজার পৃষ্ঠার বই লিখা হয় তাহলে বইটা যত বড়ই হোক না কেন, এই বইয়ের নাম থাকবে? থাকবে। তিনি বলেন এই বইয়ের নাম হবে এই- ‘সাধারণ মানুষের অন্তরে আলেম ওলামার প্রতি বিদ্বেষ তৈরি কর।’ এই বইয়ের নাম হবে এই- ‘সাধারণ মানুষের অন্তরে আলেম ওলামার ব্যাপারে কুধারণা তৈরি কর।’ ঐ বইয়ের নাম হবে- ‘সাধারণ মানুষের সাথে আলেম ওলামার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে দাও।’

লাভ কী এতে?
সাধারণ মানুষের সাথে আলেম ওলামার সম্পর্ক নষ্ট হলে কী হবে? মুফতি শফি রহমতুল্লাহি আলাই বলেন- কী হবে শুনো! হবে তো এই যে- সাধারণ মানুষের সাথে যদি আলেম ওলামার সম্পর্ক নষ্ট হয় যেমনভাবে রাখাল বকরি চরানোর জন্য মাঠে যায় আর যদি রাখাল চরানোর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চলে আসে, তাহলে যেকোনো সময় যেকোনো হিংস্র জানোয়ার বকরিগুলোর উপর আক্রমণ করার ভয় থাকে। ঠিক তেমনিভাবে আলেম ওলামার কাঁধে সাধারণ মানুষের ঈমান আমলের দায়িত্ব আল্লাহ দিয়েছেন। যদি আলেম-ওলামা সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে ইহুদি খ্রিস্টান নামক জরানোয়াররা, ইহুদি খ্রিস্টান নামক হায়েনার, এই সমস্ত জানোয়াররা সাধারণ মানুষের রক্ত চোষা শুরু করে দিবে। এই জন্য আপনি যত চক্রান্ত বলেন- আপনি কাদিয়ানীর চক্রান্ত বলেন কিংবা তথাকথিত ইসলামী জামাতের চক্রান্ত বলেন কিংবা তথাকথিত আহলে হাদীসের চক্রান্ত বলেন কিংবা তথাকথিত ডাক্তারদের চক্রান্ত বলেন কিংবা সাদের চক্রান্ত বলেন, খৃস্টানরা আলেম-ওলামাদের যে মৌলবাদী বলে, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ বলে, ওই সমস্ত চক্রান্ত বলেন, সমস্ত চক্রান্তের গোড়ার কথা একটা- আলেম ওলামার সাথে সাধারণ মানুষের সম্পর্ক নষ্ট করে দাও। এই সম্পর্ক নষ্ট হলেই তখন সাধারণ মানুষের নাকে দড়ি লাগিয়ে যেমন ইচ্ছা তেমন ব্যবহার করতে পারবে।
সাদপন্থীরা আলেম ওলামার প্রতি তাদের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে খ্রিস্টানদের দালাল এই সাদ তার অনুসারীদেরকে এখন নাকে দড়ি লাগিয়ে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করছে। আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তৌফিক দান করুন।

এজন্য একজন মানুষ হেদায়েতের উপর নাই এ কথার ৬ টি আলামত
এক নম্বর আলামত হল- অহংকার এর সাথে গুনাহ করা। মনে আছে? না ভুলে গেছেন? মনে আছে।
দুই নাম্বার আলামত হল- নেক কাজ করাটাকে লজ্জার মনে করা, শরমের মনে করা।
তিন নাম্বার আলামত হল- উম্মতের নেক জামাতকে দেখতে না পারা। উম্মতের নেকদলকে দেখতে না পারা।
চার নম্বর আলামত শুনার জন্য আমরা সকলেই মানসিক পস্তুতি গ্রহণ করি

চার নম্বর আলামত : উপদেশকে বিরক্তিকর মনে করা
চার নম্বর আলামত হল- নসিহতকে উপদেশকে ওয়াজকে বিরক্তিকর মনে করা। কোন ব্যক্তি যদি নসিহতকে ওয়াজকে বিরক্তিকর মনে করে। আলামত হলো ওই লোকটা হেদায়েতের উপর নাই।

দৃষ্টান্ত-১
দাওয়াত ও তাবলীগের ভাইয়েরা যে বেচারাকে দাওয়াতের জন্য গেছে, দাওয়াত দিতে গিয়ে যখন তার সামনে দাঁড়ালো তখন কিছু কথা আল্লাহর বড়ত্বের কথা আখেরাতের কথা, কিছু কথা তারা তাদের এলেম মত বলল। বলার পরে এই লোকটা জবাব দিল ঘ্যান-ঘ্যান করবেন না। ওয়াজ আমিও কম জানি না। আছে নাকি আমাদের এ সমাজে? আছে না কি এরকম লোক যে বলেঘ্যান-ঘ্যান করবেন না, ওয়াজ আমিও কম জানি না? আছে। এভাবে যে লোকটা নসিহতকে বিরক্তিকর মনে করে আলামাত হলো ওই লোকটা হেদায়েতের উপর নাই।

দৃষ্টান্ত-২
ছেলে নামায পড়ে না। বাবা মাশাআল্লাহ নামায পড়ে। নামায পড়ার কারণে ছেলেকে নামাযের দাওয়াত দিয়েছেন। স্বামী স্ত্রীকে নামাযের দাওয়াত দিয়েছে্ন। বড় ভাই ছোট ভাইকে নামাযের দাওয়াত দিয়েছে। আলেম নামাযের দাওয়াত দিয়েছেন। এখন তার কাছে এই দাওয়াতটা বিরক্তিকর মনে হলো। আলামত হলো লোকটা হেদায়েতের উপর নাই

সুদখোরের কাণ্ড
আমার মনে আছে বিগত ৭ থেকে ৮ বছর আগে আমি ঢাকায় যে মসজিদে জুমা’ পড়াই ওই মসজিদে জু্মায় সুদের ব্যাপারে ওয়াজ করছিলাম। তখন মসজিদ থেকে বের হয়ে এক আল্লাহর বান্দা এমন ক্ষেপা ক্ষেপলো যে, হুজুর কি আর ওয়াজ খুঁজে পায় না? শুধু সুদের ওয়াজ পাইছে আর কি কোনো ওয়াজ নাই? এই ক্ষেপার পিছনে কারণ কী? পরে জানতে পারলাম- এই ক্ষেপার পেছনে মূল কারণ হলো- ওই লোকটা সুদের কারবার এর সাথে জড়িত। এজন্য দেখবেন- সমাজে মসজিদের মধ্যে যখন ইমাম সাহেব কোন ওয়াজ করেন। বলেন তো- ইমাম সাহেবের ওয়াজ করার স্বাধীনতা আছে কি না? (আছে) কে দিয়েছে? আল্লাহ এবং তার রাসুল দিয়েছেন! এখন তিনি কোন বিষয়ে ওয়াজ করেছেন। কারো গায়ে লেগে গেছে। গায়ে লেগে যাওয়ার কারণে সে ওই ইমামের পেছনে চক্রান্ত শুরু করে দিয়েছে। আলামত হলো- ঐ লোকটা পথভ্রষ্ট। ঐ লোকটা হেদায়েতের উপর নাই।

পাঁচ নাম্বার আলামত শোনার জন্য আমরা সকলেই মানসিক পস্তুতি গ্রহণ করি। আশা করি আমাদের বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না। আমাদের সমাজে আমরা কতজন হেদায়েতের উপর আছি আর কতজন হেদায়েতের উপর নাই। অথচ এ হেদায়েত এতটাই দামি আল্লাহতালা প্রত্যেক দিন প্রত্যেক নারী-পুরুষকে একবার নয় দুইবার নয় ৩২ বার বাধ্য করেন- তোমরা আমার কাছে হেদায়েত চাও! আমার কাছে হেদায়েত ভিক্ষা চাও!!
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ

পাঁচ নং আলামত : অন্তরে হিংসা থাকা
যে ব্যক্তির অন্তরে হিংসা আছে সে লোকটা হেদায়েতের উপর নাই

অন্তরে হিংসা আছে কিনা বুঝার উপায়
আপনি বলতে পারেন হুজুর আমার মধ্যে হিংসা নাই। আপনি দেখেন তো অপর মুসলমানের কোন নেয়ামত দেখে আপনার অন্তর জ্বলে ওঠে কিনা? আপনার মনে চায় কিনা তার কাছে টাকা আছে, টাকা না থাকুক। অমুকের কাছে এলেম আছে, এলেম না থাকুক। অমুক দেখতে সুন্দর, এমন টা না হোক। অমুককে মানুষ সম্মান করে, সম্মান না করুক। এটা যদি আপনার অন্তর চায় তাহলে বুঝা যাবে যে আপনার অন্তরে হিংসা আছে।

দৃষ্টান্ত
একজন মানুষ যে হিংসার কারণে গোমরাহ হয় এর দলিল কী এর প্রমাণ কী? এর দলিল হল ইবলিশ শয়তান, ইবলিশ। আদমকে সিজদা করার জন্য যখন তাকে বলা হয়েছে- মুফাসসিরীনে কেরামের লিখেন তার অন্তরের মধ্যে তখন তিনটা গুনাহ একসাথে জেগেছিল।

হাফেয ইবনুল কাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর বাণী
এই জন্য এই মুসলিম বিশ্বের একজন বড় আলেমেদীন খুব চমৎকার কথা বলেছেন- মজা পাবেন। মনে রাখলে সারা জীবন কাজে আসবে ইনশাআল্লাহ। হাফেয ইবনুল কাইয়িম রহমাতুল্লাহি আলাইহির কথা। হাফেয ইবনুল কাইয়িম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন- এই দুনিয়াতে যত গুনাহ পরিচালিত হয় সবগুলো গুনাহের তিনটা ইঞ্জিন। বলেন কয়টা? তিনটা। আর সবগুলো গুনাহের দুইজন ড্রাইভার, একজন ট্রাফিক।
[তিন ইঞ্জিন দুই ড্রাইভের এক ট্রাফিক]
তিনি বলেন- চাই এগুনাহ-টা কুফুরি হোক। চাই এগুনাহ-টা শিরকি হোক। চাই এগুনাহ-টা অফিসের সুদের কারবার ঘুষের কারবার হোক অথবা সমাজের বেপর্দা হোক। যে গুনাই হোক না কেন সমস্ত গুনাহর পেছনে তিনটি গুনাহ ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করে।

 তিনটি ইঞ্জিন  কী?
একটা ইঞ্জিনের নাম হল অহংকার। বলেন- একটা ইঞ্জিনের নাম হলো কী? অহংকার।
দুই নম্বর ইঞ্জিনের নাম হল- হিংসা। বলেন কী? হিংসা।
তিন নম্বর এর নাম হল- লোভ।
অহংকার হিংসা লোভ এই তিনটা ইঞ্জিন দ্বারা সমস্ত গুনাহ পরিচালিত হয়। এখন এই ইঞ্জিন চালানোর জন্য ড্রাইভার লাগবে না? ড্রাইভার হলো দুইজন।

দুইজন ড্রাইভার কে?
এক ড্রাইভ এর নাম হলো- নফস মানে মন। যেভাবে মন চায় সেভাবে চলা।
মন চেয়েছে এখন মুভি দেখবো। কেন? অবৈধ উপায়ে যৌন চাহিদা পূরণের লোভ।
মন চেয়েছে এখন সুদের কারবার করবো। কেন? অবৈধ উপায়ে অর্থ সম্পদ উপার্জনের লোভ।
মন চেয়েছে এখন পর নারীর প্রতি কুদৃষ্টি দিব। কেন? অবৈধ উপায়ে যৌন চাহিদা পূরণের জন্য।
মন চেয়েছে এখন অমুকের গীবত করব, সমালোচনা করবো। কেন? নিজের সম্মান বাড়ানোর লোভ।

লোভ তিন প্রকার
১. সম্মান বাড়ানোর লোভ
২. অর্থের লোভ
৩. অবৈধ উপায়ে যৌন চাহিদা পূরণের লোভ
আর সমস্ত গুনাহ পরিচালিত হয় হয়তো অহংকারের কারণে অথবা লোভের কারণে অথবা হিংসার কারণে।
একজনকে আমি অপবাদ দিচ্ছি। কেন? আমি তার ব্যাপারে অপবাদ দিচ্ছি তাকে দেখতে পারি না। হিংসার কারণে। আমি টাখনুর নিচে কাপড় পরি কেন? অহংকারের কারনে। আমি একজন বড় ব্যক্তির সামনে উঁচু গলায় কথা বলি। কেন? অহংকার এর কারণে। ছোটকে সালাম দিতে পারি না। কেন? অহংকার এর কারণে। এভাবে যতগুলো গুনাহ পরিচালিত হয় সবগুলো গুনাহর পেছনে মূল তিনটা জিনিস কার্যকর। একটা ইঞ্জিনের নাম হল- অহংকার। আরেকটা ইঞ্জিনের নাম হল- হিংসা। আরেকটা ইঞ্জিনের নাম হলো- লোভ।
আর দ্বিতীয় ড্রাইভার এর নাম হলো রাগ বা গোস্বা। গোস্বার কারণে মানুষ গুনাহ করে। গোস্বার কারণে জুলুম করে। গোস্বার কারণে অপবাদ দেয়। গোস্বার কারণে মিথ্যা বলে। গোস্বার কারণে আরও অনেক গুনাহ হয়।

ট্রাফিকের পরিচয়
আর এই ড্রাইভার কোন দিকে যাবে এর জন্য একটা ট্রাফিকের দরকার আছে না? এ ট্রাফিক এর নাম হলো ইবলিশ। বলেন ট্রাফিকের নাম কী? ইবলিস। যেহেতু এই তিনটা ইঞ্জিন থেকে বেঁচে থাকা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আমি প্রত্যেকটা ইঞ্জিন থেকে বেঁচে থাকার জন্য একটা একটা চিকিৎসা বলব। কে কে আমল করতে রাজি আছি সবাই? অনেকগুলো চিকিৎসা থেকে শুধু একটা একটা বলব। কারণ সময় কম।

অহংকার থেকে বাঁচার উপায়
অহংকার নমুনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য হাদিস এর চিকিৎসা হলো- বেশি করে সালাম দেওয়া। বলেন কী? বেশি করে সালাম দেওয়া। কীভাবে দেখেন খুব লক্ষ্য করে!
বাবা ছেলেকে সালাম দিতে পারেনা কেন? বাবা হওয়ার অহংকার।
বুড়া যোয়ানকে সালাম দিতে পারেনা কেন? বুড়া হওয়ার অহংকার।
শিক্ষিত-অশিক্ষিত কে সালাম দিতে পারেনা কেন? শিক্ষিত হওয়ার অহংকার।
শ্বশুর জামাইকে সালাম দিতে পারেনা কেন? শশুর হওয়ার অহংকার।
শাশুড়ি বউমাকে সালাম দিতে পারেনা কেন? শ্বাশুড়াী হওয়ার অহংকার।
বড় ভাই ছোট ভাইকে সালাম দিতে পারেনা কেন? বড় ভাই হওয়ার অহংকার।
ধনী গরীবকে সালাম দিতে পারেনা কেন? ধনী হওয়ার অহংকার।
চেয়ারম্যান সাহেব সাধারণ মানুষকে সালাম দিতে পারে না কেন? চেয়ারম্যান হওয়ার অহংকার।
প্রিন্সিপাল সাধারণ শিক্ষককে সালাম দিতে পারেনা কেন? প্রিন্সিপাল হওয়ার অহংকার।
শিক্ষক ছাত্রকে সালাম দিতে পারেনা কেন? শিক্ষক হওয়ার অহংকার।
ইমাম মুসল্লিকে সালাম দিতে পারেনা কেন? ইমাম হওয়ার অহংকার।
হুজুর সাধারণ মানুষকে সালাম দিতে পারেনা কেন? হুজুর হওয়ার অহংকার।
স্বামী-স্ত্রীকে সালাম দিতে পারেনা কেন? স্বামী হওয়ার অহংকার।
আর আমার আপনার নবী ছিলেন সমস্ত অহংকার থেকে মুক্ত। তাই তিনি ছোট-বড় সকলকে সালাম দিতেন। সুতরাং হাদিসের চিকিৎসা হলো বেশি করে সালাম দেওয়া। আর নবীজি বলেছেন-
ألبادي بالسلام بريئ من الكبر,
[যে ব্যক্তি সালাম আগে শুরু করতে পারবে আল্লাহ তাআলা তাকে ধীরে ধীরে অহংকার থেকে মুক্তি দিয়ে দেবেন।] এজন্য এই শিক্ষা গ্রহণ করবেন তো ইনশাআল্লাহ?

হিংসা থেকে বাঁচার উপায়
দুই নাম্বার ইঞ্জিনের নাম হল- হিংসা। দুই নম্বর ইঞ্জিনের নাম কী? হিংসা। কোরান হাদিস থেকে সবচাইতে বড় চিকিৎসা হল- যার ব্যাপারে হিংসা হয় তার সাথে দুইটা আচরণ করবেন! একটা আচরণ হলো- তার সাথে আপনি আগ বাড়িয়ে সদাচরণ করবেন। তার সাথে আপনি আগ বাড়িয়ে ভালো ব্যবহার করবেন। তার সাথে আপনি আগ বাড়িয়ে সালাম দিবেন। আর সে যদি আপনার সাথে অন্যায় করে আপনি তাকে মাফ করে দিবেন।
আর দ্বিতীয় চিকিৎসা (তা মূলত এক চিকিৎসারই দুটি শাখা) হলো- তার কাছে যে নেয়ামতটা থাকার কারণে আপনার হিংসা হয় ওই নেয়ামতের ব্যাপারে আপনি দোয়া করবেন।
যেমন- তার সম্পদের কারণে আপনার হিংসা হচ্ছে, তাহলে আপনি এভাবে দোয়া করবেন- ‘আল্লাহ আপনি তার সম্পদ আরো বাড়িয়ে দিন!’
তার এলেম এর কারণে হিংসা হচ্ছে, আপনি মনের বিপরীত এই দোয়া করবেন- ‘হে আল্লাহ! আপনি তার এলেম আরো বাড়িয়ে দিন!’
সে দেখতে-শুনতে সুন্দর এই জন্য আপনার হিংসা হচ্ছে। আপনি দোয়া করবেন- ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে আরো সুন্দর বানিয়ে দিন!’ যে কারণে হিংসা হচ্ছে আপনি আপনার মনের বিপরীতে সে জন্য দোয়া করবেন। পারবেন না ইনশাআল্লাহ!

লোভ থেকে বাঁচার উপায়
তিন নাম্বার ইঞ্জিনের নাম হচ্ছে- লোভ। হাদীস থেকে এর চিকিৎসা হলো- দান-সদকা খয়রাত এগুলো বেশি বেশি করে করা। যে ব্যক্তি বেশি বেশি করে দান করে দান, সদকা, খয়রাত করতে পারবে আল্লাহ তাআলা তার অন্তর থেকে ধীরে ধীরে লোপ দূর করে দিবেন। এই চিকিৎসা হলো লোভ যদি সম্পদের লোভ হয়।
আর যদি লোভ হয় অবৈধ উপায়ে যৌন চাহিদা পূরণের, তাহলে এই রোগের চিকিৎসা কী? রোগের চিকিৎসা হলো- পুরুষ হলে দৃষ্টির হেফাজত করা আর মহিলা হলে পর্দার সাথে চলা। তাহলে আল্লাহতায়ালা ধীরে ধীরে তার অন্তর থেকে এই রোগ দূর করে দিবেন।
আর যদি লোভ হয় পদমর্যাদা পাওয়ার লোভ। তাহলে এই রোগের চিকিৎসা কী? এই রোগের চিকিৎসা হলো- আলেম-ওলামা সাথে বেশি করে চলাফেরা করা। তাদের সাথে উঠাবসা করলে আল্লাহতালা ধীরে ধীরে তার অন্তর থেকে এই রোগটা ও দূর করে দিবেন। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে সবগুলো রোগ দূর করার তৌফিক দান করুন আমীন।
যাই হোক সেটা বলতে যাচ্ছিলাম- একজন মানুষ হেদায়েতের উপর নাই এর পাঁচ নাম্বার আলামত হচ্ছে- হিংসা। বলেন পাঁচ নাম্বার আলামত কী? হিংসা। আমার সময় শেষ হয়ে আসছে এজন্য ছয় নাম্বার আলামত বলে হেদায়েতের উপর কীভাবে আসবো এ সম্পর্কে পাঁচ-সাত মিনিট একটা সংক্ষিপ্ত রাস্তা বলে আমার আলোচনা শেষ করবো ইনশাআল্লাহ।

ছয় নাম্বার আলামত : কুরআন হাদিস সামনে আসার পরও টালবাহানা করা
কুরআন-হাদীস সামনে আসার পরও যে লোকটা বাপ-দাদার দোহাই দিয়ে কুরআন হাদিস মানতে পারে না; আলামত হলো- লোকটার হেদায়েতের উপর নাই।

দৃষ্টান্ত :
আমাদের সমাজে যারা মিলাদ কিয়াম পার্টি সিন্নী পাটির্, তারা এই রোগে লিপ্ত। যখন তাদের বলা হয় কুরআনে তো মিলাদ-কিয়াম নাই। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের নোয়াখালী অঞ্চলে তো এগুলো নাই। আছে নাকি? আছে। তো যখন তাদের বলা হয় কুরআনে তো নাই এই মিলাদের কথা। আছে দুরুদের কথা। হাদীসে আছে- ‘নবীজি আলাইহিস সালাম কখনও কিয়াম করে নাই। সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম কখনও কিয়াম করেন নাই। তোমরা কোত্থেকে কর? তখন বলে- বাপ-দাদা কইরা আসছে, মানুষ কইরা আসছে, এত মানুষ করে।
যেই লোকটা এভাবে কুরআন হাদীসের সামনে মানুষের দোহাই দিবে। কুরআন হাদীসের সামনে বাপ দাদার দোহাই দিবে। আলামত হলো- ঐ লোকটা হেদায়েতের উপর নাই। তাহলে একজন মানুষ হেদায়েতের উপরে নাই এর সর্বমোট কয় আলামত? (ছয় আলামত) বলেন- এর সর্বমোট কয় আলামত? ছয় আলামত। এই ছয় আলামতের শিরোনাম বলে দিয়ে হেদায়েতের উপর আসার রাস্তা কী হবে- আমি সে দিকে চলে যাব।
এক নাম্বার. আলামত হল- কোন ব্যক্তি যদি অহংকারের সাথে গুনাহ করে তাহলে আলামত হলো- ঐ লোকটা হেদায়েতের উপর নাই।

দুই নাম্বার. নেক কাজ করতে যদি লজ্জাজনক মনে হয়, শরমের মনে হয়, আলামত হলো ঐ লোকটা হেদায়েতের উপর নাই।
তিন নাম্বার. উম্মতের নেক জামাতকে যদি দেখতে না পারে, তার সাথে যদি শত্রুতা রাখে, বিদ্বেষ রাখে, আলামত হলো- ওই লোকটা হেদায়েতের উপর নাই।
চার নাম্বার. নসীহত বা উপদেশ বা ওয়াজকে যদি কোনো ব্যক্তি বিরক্তিকর মনে করে, আলামত হলো- ওই লোকটা হেদায়েতের উপর নাই।
পাঁচ নাম্বার. কোন ব্যক্তির অন্তরে যদি হিংসা থাকে, আলামত হলো- ওই লোকটা হেদায়েতের উপর নাই। ছয় নাম্বার. কোন ব্যক্তির সামনে কুরআন হাদীস স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পরও সে যদি বাপ-দাদার দোহাই দেয়, আলামত হলো- ওই লোকটা হেদায়েতের উপর নাই। এবার হেদায়েতের উপর আসার দরকার আছে কি না? আছে।
আমরা আশা করি এখানে বসেই টের পেয়ে গেছি কে কে আমরা হেদায়াতে নাই। শুরুতেই বলেছি আঙ্গুল টাকার দিকে রাখবো নিজের দিকে এজন্য আমরা আশাকরি প্রত্যেকে টের পেয়ে গেছি কে কে আমরা হেদায়েতের উপর নাই (আর কে কে আছি।)

হেদায়েতের উপর আসার পদ্ধতি
হেদায়েতের উপর আসার মৌলিক চিকিৎসা আল্লাহতায়ালা সূরা ফাতেহার মধ্যে দুইটা দিয়েছেন। একটার নাম হল- দোয়া। আর একটার নাম হল- সোহবত।
সূরা ফাতিহায়-
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ  এর মাধ্যমে আল্লাহতালা এই পথ দিলেন। এই রাস্তা দিলেন যে হেদায়েত পাওয়ার একটা পথ হলো- দোয়া। আল্লাহর কাছে দোয়া করা। হে আল্লাহ আপনি হেদায়েত দান করুন।
আমি আপনাদের সামনে খুতবাতে যে আয়াতটা তেলাওয়াত করেছি সেটি হল- হেদায়েতের দোয়া সম্পর্কিত। আল্লাহ বলেন-
رَبَّنَا لَا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ
হে আল্লাহ আপনি হেদায়েত দেওয়ার পর গোমরাহ করবেন না। হে আল্লাহ আপনি হেদায়েত দান করুন। (মর্মাথর্) তাহলে একটা রাস্তা হল দোয়া। আর কোন হেদায়েত দিবে আল্লাহ তাআলাঅ দ্বিতীয় আয়াতে বলেন-صراط الذين أنعمت عليهم,
যাদেরকে আপনি নেয়ামত দিয়েছেন। হে আল্লাহ! তাদের পথে আপনি আমাকে হেদায়েত দিন! এখান থেকে বুঝা যায় দ্বিতীয় নাম্বার পথ হলো সোহবত। দ্বিতীয় নাম্বার পথ হলো- আলেম-ওলামার কাছে বেশি বেশি আসা যাওয়া করা।
এক নম্বর পথ হলো- দোয়া। এ সম্পর্কে আমি বিস্তারিত আজকের বলতে যাব না। শুধু এতোটুকু বলব- আমরা আমাদের কোনো দোয়াতেই হেদায়েতের দোয়া করতে ভুলব না। রাজি আছি? ইনশাআল্লাহ। আল্লাহর কাছে হেদায়েত চেয়ে দোয়া করব? ইনশাআল্লাহ। মনে রাখবেন! এ সম্পর্কে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা সেটা হলো- ধনসম্পত্তি, টাকা-পয়সা আল্লাহ না চাইলেও দেন। যেমন আল্লাহ কারুনকে দিয়েছেন ফেরাউন কে দিয়েছেন আবার এই ধন সম্পদ আল্লাহ নবীদেরকে দিয়েছেন; কিন্তু হেদায়াত এটা এমন একটা জিনিস এমন একটা দামী জিনিস যে, এটা আল্লাহর কাছে ভিক্ষা করা ছাড়া আল্লাহ দেন না। আল্লাহর কাছে মনের থেকে হেদায়েত কামনা করতে হবে। এজন্য আল্লাহর কাছে হেদায়েত ভিক্ষা চাইবেন।
দুই নাম্বার হল আলেম-ওলামাদের সোহবতে থাকবেন। আমার কাছে আসা যাওয়া করবেন। এতে হবে কী? (একটা ছোট উদাহরণ দিয়ে আমি আমার আলোচনা শেষ করবো।)

আমার শায়খ ও মুরশিদ বলেন
দেখো একটা বাচ্চার যখন জন্ম গ্রহণ করে জন্মগ্রহণ করলেই তখন সে মায়ের দুধ পান করে এছাড়া অন্য কিছু তার পেটে সয়না যখন বাচ্চাটা আরেকটু বড় হয় তখন আস্তে আস্তে গরুর দুধ পান করা শুরু হয়। আরেকটু বড় হলে তখন আস্তে আস্তে ছোট খাবার খাওয়া শুরু করে। আরেকটু বড় হলে যে কোন খাবার খেতে সক্ষম হয়। ঠিক তেমনিভাবে আলেম ওলামার বুকের সাথে যদি আপনি লেগে থাকেন তাহলে আপনি যে কোনো রাস্তায় হেদায়েত পাবেন। আর যদি আলেম-ওলামা থেকে বিচ্ছিন্ন হন তাহলে আপনি বোখারী শরিফ বোগলে নিয়ে হাটবেন, হেদায়েত পাওয়ার চিন্তা করবেন। ডাক্তারদের কথা শুনবেন হেদায়েত পাওয়ার চিন্তা করবেন। আল্লাহর বান্দা এগুলো এখন আপনার হজম হবে না। বদহজম হবে। আপনি পড়েন নিষেধ করি নাই। আপনি ডাক্তারদের লেকচার শুনেন নিষেধ করি নাই। সাদের বক্তব্য আপনি শুনেন নিষেধ করি নাই। মিথ্যুক মতিউর রহমান মাদানীর বক্তব্য শুনেন নিষেধ করি নাই। মিথ্যুক আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ এর বক্তব্য শুনেন নিষেধ করি নাই। বেদআতীদের বক্তব্য শুনেন নিষেধ করি নাই। তবে আলেম’-ওলামার বুকের সাথে লেগে থাকেন, তাদের সাথে লেগে থেকে পেটের হজমটা বাড়ান। হজম যদি না বাড়ান আর ডাক্তারদের কথা শুনেন গোমাহ হবেন।

হজম যদি না বাড়ান আর সাদের কথা শুনেন পথভ্রষ্ট হবেন। হজম যদি না বাড়ান আর আপনি ইউটিউব এর বক্তাদের কথা শুনেন আপনার বদ হজম হবে। হজম যদি না বাড়ান আর আপনি বুখারী শরীফ বগলের নিচে নিয়ে হাঁটেন তাহলে বদ হজম হবে। পথভ্রষ্ট হবেন। আর আলেম ওলামার বুকের সাথে লেগে থাকেন, হজম বাড়বে। যে কোন কথা আপনি শুনবেন আপনি কখনো পথভ্রষ্ট হবেন না। আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়েতের এই রাস্তাটা গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহ আমাদের সকল গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন আমীন।
واخر دعوانا أن الحمد لله رب العلمين