জিজ্ঞাসা–১৮২১: মাজারে ফুল-চাদরের ব্যবহার কি? এই বিষয়ে আমাদের কি করণীয়?–Sk Kutubuddin
জবাব: কবরে ফুল বা চাদর দেওয়া বেদআত। কেননা, রাসুলুল্লাহ ﷺ নিজের শত শত প্রিয় সাহাবীকে দাফন করেছেন। মদীনা তাইয়েবায় ফুলেরও অভাব ছিল না। কিন্তু তিনি কারো কবরে ফুল দেন নি কিংবা খোলাফায়ে রাশেদীনও রাসুলুল্লাহ ﷺ এর ইন্তেকালের পর তাঁর পবিত্র কবরে ফুল দেন নি। অনুরূপভাবে খোলাফায়ে রাশেদীনের কবরেও সাহাবীগণ ফুল দেন নি। পরবর্তীতে কোনো একজন সাহাবীর কবরে কোনে একজন তাবিয়ী ফুল দিয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। গোটা হাদীস-সমগ্রে এর একটি প্রমাণও পাওয়া যায় না। সুতরাং যে কাজ রাসুলুল্লাহ ﷺ থেকে শুরু করে কোনো একজন সাধারণ তাবেয়ী থেকেও প্রমাণিত নয় তা বেদআত বৈ কিছু নয়।
অনুরূপভাবে মুজতাহিদ ইমামগণ ও ফকীহগণ কাফন-দাফন ও কবর সংক্রান্ত ছোট ছোট সুন্নত-মুস্তাহাব ও আদবও বিশদভাবে লিখেছেন। প্রায় হাজার বছরের ফিকহ-রচনাবলীতে কোথাও কবরে ফুল দেওয়ার কথা নেই। এটি যদি শরিয়তে অনুমোদন দেয়া হত তাহলে হাজার বর্ষব্যাপী ইমাম ও ফকীহগণ এ থেকে উদাসীন কীভাবে রইলেন? সুতরাং এটি বেদআত বৈ কিছু নয়। আর বেদআত সম্পর্কে করণীয় কী; তা নবী ﷺ স্পষ্টভাবে বলেছেন,
مَنْ أَحْدَثَ فِيْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ
যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করে আমাদের দ্বীনে যার অনুমোদন নেই সেটা প্রত্যাখ্যাত। (মুসলিম)
তাহলে এটা আসল কোত্থেকে? এর জবাবে ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা (আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটির ফতওয়াসমগ্র)-তে এসেছে,
وضع الزهور على قبور الشهداء أو قبور غيرهم- من البدع التي أحدثها بعض المسلمين في الدول التي اشتدت صلتها بالدول الكافرة، استحسانا لما لدى الكفار من صنيعهم مع موتاهم، وهذا ممنوع شرعا لما فيه من التشبه بالكفار،
শহিদদের কবরে কিংবা অন্যদের কবরে ফুল দেয়া এমন এক বেদআত যা আবিস্কার করেছে এমন কিছু মুসলিম রাষ্ট্র যেগুলোর বন্ধন অমুসলিম রাষ্ট্রেগুলোর সঙ্গে দৃঢ়। কাফেররা তাদের মৃতদের সঙ্গে যা করে এরাও তাদের অনুকরণে তা করে। এটি শরিয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ। কেননা, এতে কাফেরদের সাদৃশ্যতা গ্রহণ বিদ্যমান। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা, ফতওয়া নং ৪০২৩)
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী