নাপাকি দুই প্রকার

জিজ্ঞাসা–৪৯৮: আসসালামু আলাইকুম। আমার দুইটি প্রশ্ন রয়েছে। দুইটিই যথারীতি পাক-পবিত্রতা সম্পর্কে। ১.কোন কাপড়ে নাপাকী লেগেছে। তবে তা এক দিরহাম পরিমাণ নয়। এ স্থানে পরবর্তীতে যদি পানি পরে এক দিরহাম থেকে বেশী হয় তবে কী তা নাপাক বলে গণ্য হবে? ২. এমন কী কোন নাপাকী আছে যা এক দিরহাম থেকে কম লাগলেও শরীর বা কাপড় নাপক বলে গণ্য হবে? জনাব,আমি আপনাদের একজন নিয়মিত পাঠক এবং প্রশ্নকারী।আশা করি পূর্বেকার মত এই প্রশ্নগুলোরও উত্তর পাব। মাহ্দী

জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله

ক- কাপড়ে অল্প নাপাকি লাগার পর সেখানে পানি পড়ে ছড়িয়ে গেলে এবং তা এক দেরহাম থেকে বেশি হয়ে গেলে তবে নাপাক বলে গণ্য হবে

খ-নাপাকি দুই প্রকার–নাজাসাতে গলিজা এবং নাজাসাতে খফিফা।
যে সকল বস্তু মানুষের শরীর থেকে বের হয়ে গেলে অজু নষ্ট হয় অথবা গোসল ফরজ হয়, ঐ সকল বস্তু নাজাসাতে গলিজা। যেমন- পায়খানা, প্রস্রাব, মনি, মজি, পূঁজ এবং মুখভর্তি বমি। হায়েজ, নেফাস এবং এস্তেহাযার রক্তও নাজাসাতে গলিজা।  শিশু, বালক-বালিকা যে বয়সেরই হোক তাদের প্রস্রাবও নাজাসাতে গলিজার মধ্যে গণ্য। শরাব, প্রবাহিত রক্ত, মৃতজন্তু, যে সকল জন্তুর গোশ্ত হালাল নয়- তাদের প্রস্রাব, লাদ, গোবর, কুকুরের মল, হাঁস মোরগের পায়খানাও নাজাসাতে গলিজার অন্তর্ভুক্ত। হিংস্র জানোয়ার, বিড়াল এবং ইঁদুরের পায়খানাও তাই।
পক্ষান্তরে ঘোড়ার প্রস্র্রাব এবং যে সকল পশুর গোশত্ হালাল যেমন- গরু, ছাগল, উট ইত্যাদির প্রস্রাব নাজাসাতে খফিফা। যে সকল পাখির গোশত্ হারাম যেমন- বাজ, চিল ইত্যাদির মলও নাজাসাতে খফিফা।
নাজাসাতে গলিজা এক দেরহাম পরিমাণ অপেক্ষা বেশী লাগলে শরীর অথবা কাপড় নাপাক হয়ে যায়। হাতের তালু সোজা করে পানি নিলে যতটুকু পানি তালুতে আটকে যায়- পানির ততটুকু আয়তনকে এক দেরহাম ধরা হয়। নাপাকি জমাট হলে দেরহামের ওজন এবং তরল হলে দেরহামের আয়তন ধর্তব্য। নাজাসাতে খফিফা কাপড়ের চার ভাগের একভাগ অর্থাৎ একভাগের অধিক জায়গা জুড়ে লাগলে কাপড় নাপাক হয়ে যায়। শরীরের কোনো অঙ্গের চারভাগের একভাগ বা একভাগের বেশী জায়গায় লাগলে শরীরও নাপাক হয়ে যায়।

عن أبي هريرة عن النبي ﷺ قال : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم

হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ  বলেছেন, এক দিরহাম পরিমাণ রক্তের কারণে নামায পুনরায় আদায় কর। (সুনানে বায়হাকী কুবরা ৩৮৯৬, জামেউল আহাদীস ১০৭৮৩)

والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী
আরো পড়ুন-মানুষের ঘাম পাক তবে…
মযি ধুয়ে নেয়া জরুরি কিনা?
নাপাক কাপড়ে লেগে থাকা বালিকণা অল্প পানিতে পড়লে…
গোসলের অবশিষ্ট পানি দিয়ে অযু হবে কি?
বাথরুমে অযু করা যাবে কি; অনেক সময় সেখানে বাচ্চারা পেশাব করে?
মযি কতটুকু লাগলে শরীর বা কাপড় নাপাক হয়?
ইস্তেঞ্জায় ব্যবহৃত পানি কাপড়ে লাগলে তা নাপাক হবে কি?
পেশাব মুছে ফেলার পর সেখানে ভেজা পা পড়লে এবং মোছার ন্যাকড়া তিনবার ধুয়ে নিলে…
বৃষ্টির কারণে রাস্তায় জমা কাদা-মাটি ও পানি কি নাপাক?
পেশাব প্যান্টে লেগেছে সন্দেহ হলে কী করণীয়?
টয়লেটের মশা শরীর বা কাপড়ে বসলে তা নাপাক হয় কি?
স্বপ্নদোষ হলে বিছানা-কাপড় কি নাপাক হবে?
গোসল করার পর নাপাক কাপড় পরলে শরীর নাপাক হবে কি?
নাপাক কাপড় শুকনা কিছুতে লাগলে তা নাপাক হয়ে যাবে কি?
পেশাব করার স্থান থেকে পানির ছিটা আসলে করণীয়
নাপাক-কাপড় ধোয়ার পানি লাগলে কী করব?
একই বালতির পানিতে নাপাকি লাগা কাপড় ও অন্যান্য কাপড় ধোয়া যাবে কি?
মযী বা কামরস লেগে যাওয়ার সন্দেহ হলে কী করণীয়?
গোসলের সময় ছিঁটা পাত্রে পড়লে নাপাক হবে কিনা?
পানি ব্যবহার না করে শুধু কুলুখ ব্যবহার করা
পেশাব ঝরার ব্যপারে সন্দেহ হলে কী করণীয়
 স্বপ্নদোষ হলে কী করণীয়?
নাপাক-কাপড় ধোয়ার পানি লাগলে কী করব?
 সাদা সামান্য আঠালো জিনিস বের হলে কি গোসল ফরজ হবে?
মযী বা কামরসের বিধান কী?
নাপাক কাপড় পাক করার উপায়
 ফরজ গোসল করা অসম্ভব হলে কী করবে?
 ফরজ গোসল না করে কোনো কাজ করা যাবে কী?
 ফরজ গোসলের আগে কোন্ কাজ করা যাবে এবং কোন্ কাজ করা যাবে না?
 ফরয গোসল সূর্য ওঠার পর করলে কি রোজা হবে?
 ফরজ গোসলের সময় কুলি করা এবং নাকে পানি দেয়ার কথা ভুলে গেলে কী করবে?
 ফরজ গোসলের সময় কি পুরুষের মূত্রনালীর ভিতরে পানি ঢোকানো জরুরি? ফরজ গোসলের নিয়ম

��ন্তব্য

  1. ১।নাপাকি অবস্হায় কোন কিছু ধরলে ওই জিনিসটা কি নাপাক হবে?
    ২।হাতে নাপাকি লাগার পর শুকিয়ে গেলে ওই হাত দ্বারা মোবাইল ফোন, বই, আসবাবপত্র, কাপড় এসব ধরলে তা নাপাক হবে কি?

    • নাপাকি অবস্হায় কোন কিছু ধরলে ওই জিনিসটা নাপাক হয়না। অনুরূপভাবে হাতে নাপাকি লাগার পর শুকিয়ে গেলে ওই হাত দ্বারা কোনো কিছু ধরলে তা নাপাক হ্য না। তবে তার সাথে নাপাক বস্তুর মিশ্রণ ঘটলে নাপাক হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 1 =